শ্রীরামপুরের মাহেশে অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে শুরু হল জগন্নাথদেবের চন্দনযাত্রার অনুষ্ঠান। মাহেশের এই মন্দির ৬০০ বছরেরও বেশি পুরনো। প্রতি বছর বাংলার এই অঞ্চলে রথযাত্রা দেখার জন্য ভক্তদের ঢল নামে। জগন্নাথের চন্দনযাত্রাতেও বাঁধভাঙা ভিড়ের সাক্ষী হয় মাহেশ। মন্দির সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ৪২ দিন ধরে চলবে এই চন্দনযাত্রার উৎসব।
চন্দন প্রলেপের দায়িত্বে সেবাইতরা
প্রতি বছরই এই দিন মানুষের ঢল নামে। আর তাই প্রশাসনের তরফেও আঁটসাঁট নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকে। এই বছরও রয়েছে তেমনটাই। বেলা ১১টার পর চন্দনযাত্রার সন্ধিক্ষণে জগন্নাথদেব, বলরাম ও সুভদ্রার গাত্রে চন্দনের প্রলেপ দেওয়া শুরু হয়। সেবাইতরাই থাকেন এই দায়িত্বে। এই বছর জগন্নাথদেবের প্রধান সেবাইত সৌমেন অধিকারী ও ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক পিয়াল অধিকারীসহ মন্দিরের অন্য পুরোহিতরা জগন্নাথের গাত্রে চন্দন প্রলেপ দিয়েছেন।
পুরাণ মতে এই দিনেই…
কথিত আছে, অক্ষয় তৃতীয়ায় সত্যযুগের অবসান হয়। সূচনা হয় ত্রেতা যুগের। শ্রীগোবিন্দর দ্বাদশ যাত্রা এবং দেবীর ষোড়শ যাত্রার মধ্যে অন্যতম যাত্রা চন্দন যাত্রা। গরমকালের অসহ্য তাপে মা যশোদা গোপালের সারা অঙ্গে চন্দন লেপন করে রাখতেন। সেই প্রথা মেনে মহাপ্রভু জগন্নাথ দেবের গাত্রেও চন্দন লেপন হয়। ২১ দিন ধরে এই অনুষ্ঠান চলে। অন্যদিকে চন্দন সরোবরে ভূদেবী ও জগন্নাথের জলকেলি করেন। অক্ষয় তৃতীয়া থেকেই শুরু হয় এই চন্দন যাত্রা।

এসেছিল স্বপ্নাদেশ
জগন্নাথদেব ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক পিয়াল অধিকারী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়াই অক্ষয় তৃতীয়া নামে পরিচিত। এই দিনেই চন্দনযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। পুরাণ মতে কথিত আছে, এই দিন রাজা ইন্দ্রঘনুকে প্রভু জগন্নাথদেব স্বপ্নাদেশ দিয়েছিলেন। স্বপ্নাদেশ ছিল, প্রবল গ্রীষ্মের দাবদাহ থেকে বাঁচতে তাঁর মাথায় এবং সর্বাঙ্গে যেন চন্দনের প্রলেপ দেওয়া হয়। সেই স্বপ্নাদেশ পাওয়ার জগন্নাথদেবকে চন্দন মাখানো শুরু হয়েছিল। তখন থেকেই যুগ যুগ ধরে এই রীতি প্রচলিত।