যাঁরা বই প্রেমী, যাঁরা বাংলার বাসিন্দা, যাঁদের জন্ম ১৯৯০ এর আগে তাঁদের হয়তো ১৯৯৭ সালের বইমেলার কথা আজও স্পষ্ট ভাবে মনে আছে। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল হাজার হাজার বই। কিন্তু সেই ঘটনার মাত্র ৫ দিন পরই নতুন ভাবে বইমেলা শুরু হয়েছিল কলকাতায়। আর তার নেপথ্যে ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
১৯৯৭ এর বইমেলা আর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য
৮ অগস্ট না ফেরার দেশে চলে গেলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁর মৃত্যুর পর স্মৃতি হাতড়ে সংবাদ প্রতিদিনকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে লেখক ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায়ের কথায় উঠে আসে ১৯৯৭ সালের বইমেলার প্রসঙ্গ। তিনি স্মৃতি হাতড়ে বলেন, ‘১৯৯৭ সালের বিকেলের সেই দৃশ্য কোনও দিন ভুলব ন। চোখের সামনে দাউ দাউ করে জ্বলছিল আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। দুচোখ ঝাঁপিয়ে জল আসছে। ময়দান মিডিয়ায় ছয়লাপ। ফায়ার ব্রিগেড আসেনি। এমন সময় কিছু দূরে একটা সাদা গাড়ি এসে থামল। আর সেখান থেকেই নেমে এলেন তৎকালীন হোম মিনিস্টার বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।’
তিনি এরপর আরও বলেন, ‘উনি এসেই বলেন এখন আমাদের আগে বইমেলা গড়ে তুলতে হবে। ঠিক পাঁচদিন পরে নতুন করে মেলা শুরু হবে। আমরা ভেবেছিলাম পাঁচদিনে নতুন মেলা এ তো অসম্ভব। উনি বলেছিলেন পাঁচদিনে বইমেলা করেই ছাড়ব। সিক্সথ ডে থেকে শুরু হবে মেলা। সত্যিই তাই হয়েছিল। গোটা পৃথিবী অবাক হয়ে গিয়েছিল। অনেকে খবরের কাগজে হেডলাইন করেছিল বইমেলা মৃত্যুহীন। ফিনিক্স পাখির মতো আবার জন্ম নিয়েছে।’
বুদ্ধদেবের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘উনি এখন আদ্যোপান্ত বই এবং সাহিত্যপ্রেমী মানুষ ছিলেন। ওঁর নেতৃত্বে যেভাবে রাজ্যসরকার বইমেলার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল সেটা কখনই ভুলতে পারব না।’