রহস্যের ধোঁয়া বাড়ছে পাকিস্তানি অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের মৃত্যু নিয়ে। ভাড়া নেয়া ফ্ল্যাটে মৃত্যু হওয়ার পর নয়মাস ফ্লোরে পড়েছিল অভিনেত্রীর অর্ধগলিত লাশ। সে রহস্যের জট খুলতে এবার অভিনেত্রীর কেসটি হাতে নিয়েছে পাকিস্তানের কাউন্টার টেররিজম ডিপার্টমেন্টে (সিটিডি)।পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম এআরওয়াই এবং আব তাক টিভি থেকে জানা যায়, মৃত হুমায়রার অর্ধগলিত লাশ থেকে আশানুরূপ রিপোর্ট না পাওয়ায় তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে সিটিডি।
সিটিডির রিপোর্ট বলছে, ২০২৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর দুপুর ১টার দিকে হুমায়রাকে ক্লিফটনে যেতে দেখা যায়। ঘণ্টাখানেক পর তিনি বাসায় ফেরেন। এরপর আর তাকে কেউ দেখতে পাননি।রিপোর্ট থেকে আরও জানা যায়,
হুমায়রার ফ্ল্যাটটি ভেতর থেকে তালাবন্ধ ছিল এবং সব দরজা-জানালা বন্ধ থাকলেও বারান্দার একটি দরজা খোলা ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মৃত্যুর আগে বাথরুম থেকে বের হয়ে কোনো কিছুর সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছিলেন হুমায়রা। এরপর মাটিতে পড়ে গিয়ে তার মৃত্যু হয়।
নয় মাস এভাবেই বন্ধ ফ্ল্যাটের মেঝেতে পড়েছিল মরদেহ। বাড়ির দারোয়ান বলছে, কয়েক মাস আগে অন্য ভাড়াটিয়ারা অভিনেত্রীর ফ্ল্যাট থেকে আসা দুর্গন্ধের কথা জানালেও বিষয়টি তখন সেভাবে পাত্তা দেননি দারোয়ান। যে কারণে অর্ধগলিত লাশের ফরেনসিক রিপোর্ট থেকে অনেক কিছুই জানা সম্ভব হচ্ছে না।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনটি সিম কার্ড ব্যবহার করতেন হুমায়রা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যার সবই সচল ছিল। মৃত্যুর রহস্য জানতে এবার সেই সিম কার্ড ও মোবাইল ফোন খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিটিডি। তদন্তের জন্য সিটিডি অভিনেত্রী হুমাইরার ব্যক্তিগত মোবাইলের ডিলিট করা মেসেজগুলোও পুনরুদ্ধার করবে।
এদিকে অভিনেত্রীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের রিপোর্ট বলছে, অ্যাকাউন্টে এখনো প্রায় ৪ লাখ রুপি রয়েছে। যা প্রমাণ করে অর্থকষ্টে ছিলেন না হুমায়রা।
তবে নিয়মিত কাজ পেতে সমস্যায় পড়েছিলেন। মৃত্যুর আগে তাই অন্তত ১০ জনকে ফোন করে কথা বলতে চেয়েছিলেন এ অভিনেত্রী। কিন্তু কারো সঙ্গেই যোগাযোগ করতে পারেননি। যার মধ্যে তার ভাই নাভিদ আসগরও ছিলেন।
তদন্তকারীরা বলছেন, অভিনেত্রীর ফ্ল্যাটে কোনো গয়না পাওয়া যায়নি। যেটি বেশ সন্দেহজনক। তাই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছে করাচি পুলিশ। সন্দেহপ্রবণ নতুন দিকগুলো তদন্তের পর রিপোর্ট হাতে পেলেই নিশ্চিত হওয়া যাবে অভিনেত্রীর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে নাকি পরিকল্পিতভাবে কেউ তাকে খুন করেছে।