অস্ত্র কোম্পানির বিজ্ঞাপনে গাজা গণহত্যার ভিডিও

Spread the love

অস্ত্রের বিজ্ঞাপনে গাজায় চলমান গণহত্যার ভিডিও ব্যবহার করছে ইসরাইলি কোম্পানি। দেশটির অস্ত্র নির্মাতা কোম্পানি রাফায়েল একটি বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে। তাতে এমন একটি ভিডিও ব্যবহার করা হয়েছে, যা গাজায় চলমান গণহত্যা থেকে নেয়া। যেখানে দেখা যাচ্ছে, একটি ড্রোন এক ফিলিস্তিনির পিছু নিয়ে এক পর্যায়ে তার উপর বিস্ফোরিত হচ্ছে।

বিষয়টি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়েও উঠে এসেছে। সংবাদমাধ্যমটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি ভিডিও পোস্ট করে ইসরাইলি অস্ত্র নির্মাতা কোম্পানি রাফায়েল। ওই ভিডিওটি মূলত ওই কোম্পানির স্পাইক ফায়ারফ্লাই মডেলের একটি ড্রোনের যেটা গাজায় এক নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে হত্যা করতে ব্যবহার করা হয়।

স্পাইক ফায়ারফ্লাই ড্রোনের দুই বছর পূর্তিতে ওই ভিডিও পোস্ট করা হয়। তাতে রাফায়েল কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞাপনের ভাষায় জানায়, ‘স্পাইক ফায়ারফ্লাই ড্রোনটি কৌশলগত বাহিনীর জন্য নির্ভুলতার এক নতুন যুগের সূচনা করেছে। এটি পরীক্ষিত, বিশ্বস্ত ও কৌশলগত।’

ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ছোট আকারের আত্মঘাতী ড্রোন যুদ্ধবিদ্ধস্ত গাজার একটি আবাসিক এলাকায় মৃদু শব্দে ভেসে বেড়াচ্ছে। এরপর রাস্তা দিয়ে হাঁটতে থাকা এক ফিলিস্তিনিকে শনাক্ত করে এবং দ্রুতই তার ওপর বিস্ফোরিত হয়।

ভিডিওটির শিরোনাম দেয়া হয়েছে, ‘স্পাইক ফায়ারফ্লাই ইন আরবান ওয়ারফেয়ার’ অর্থাৎ যুদ্ধ-এলাকায় স্পাইক ফায়ারফ্লাই। এমনকি ভিডিওটির সঙ্গে নাটকীয় ও সামরিক ঘরানার ‘ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক’ও যোগ করা হয়েছে।

ভিডিওর ওপর লেখা বার্তায় বলা হয়, ‘ড্রোনটি লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করে, তাকে অনুসরণ করে এবং হুমকি নিষ্ক্রিয় করে।’ ভিডিওটি গাজার উত্তরাঞ্চলের আল-তাওয়াম এলাকায় ধারণ করা বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘দুটি গুগল আর্থ স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ভিডিওটি গত বছরের ৪ জুন থেকে ১ ডিসেম্বরের মধ্যে ধারণ করা হয়েছে।’

তিনি আরও জানান, ২০২৪ সালের নভেম্বরের সেন্টিনেল স্যাটেলাইট চিত্রেও ওই এলাকায় কিছু পরিবর্তনের চিহ্ন রয়েছে। ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে রাফায়েল কর্তৃপক্ষ জানায়, ফায়ারফ্লাই ড্রোনটি খুবই সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রেখে জিপিএস জ্যামিং ও প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও নির্ভুল হামলা চালাতে সক্ষম হয়েছে। এর মাধ্যমে সবচেয়ে কঠিন পরিবেশেও নিজেকে প্রমাণ করেছে ফায়ারফ্লাই।

ড্রোনটি মূলত স্থল বাহিনীর জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। ঘনবসতিপূর্ণ শহুরে এলাকায় যেখানে পরিস্থিতি বোঝা কঠিন, শত্রুরা আড়াল থেকে যুদ্ধ করছে এবং বেসামরিকদের উপস্থিতির কারণে গোলাবর্ষণ সীমিত, সেখানে নিরাপদে অপারেশন চালানোর জন্য এটি তৈরি করা হয়েছিল।

তবে রাফায়েলের ভিডিওতে দেখানো ঘটনার ক্ষেত্রে উপরের কোনো শর্তই প্রযোজ্য নয়। ভিডিওটি প্রকাশিত হওয়ার পর এ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা শুরু হয়। মিডল ইস্ট আই জানিয়েছে, প্রতিবেদনটি প্রকাশের আগে তারা (১৪ জুলাই বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটা) রাফায়েল কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা কোনো মন্তব্য করেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *