‘ভারত নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী ২০২৬ সালের মধ্যে এস-৪০০ স্ট্র্যাটেজিক বিমান প্রতিরক্ষা মিসাইল ব্যবস্থার বাকি রেজিমেন্টগুলি পাবে।’ ভারত-পাক সংঘর্ষের পরেই জানিয়েছেন রাশিয়ার উপ-রাষ্ট্রদূত রোমান বাবুশকিন।ভারতের এস-৪০০ প্রতিরক্ষা মিসাইল ব্যবস্থা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপারেশন সিঁদুরে তার অসাধারণ কার্যকারিতা প্রদর্শন করেছে, যা ভারতের বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করেছে।
রাশিয়ার উপ-রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা শুনেছি যে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার সময় এস-৪০০ অত্যন্ত কার্যকরভাবে কাজ করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিনের সহযোগিতার ইতিহাস রয়েছে। ইউরোপ এবং এখানকার পরিস্থিতি বিবেচনায়, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আমাদের প্রতিরক্ষা সহযোগিতার একটি সম্ভাবনাময় বিষয়।’ তিনি জানান, বাকি ইউনিটগুলির চুক্তি নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী ২০২৫-২০২৬ সালের মধ্যে সম্পন্ন হবে।
২০১৮ সালে ভারত রাশিয়ার সঙ্গে ৫.৪৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে পাঁচটি এস-৪০০ রেজিমেন্ট ক্রয়ের জন্য। এরমধ্যে তিনটি রেজিমেন্ট ইতিমধ্যে পাকিস্তান ও চিন সীমান্তবর্তী পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলে মোতায়েন করা হয়েছে।প্রথম রেজিমেন্টটি ২০২১ সালের ডিসেম্বরে এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় রেজিমেন্ট যথাক্রমে ২০২২ সালের এপ্রিল ও ২০২৩ সালের অক্টোবরে সরবরাহ করা হয়েছে। ভারতীয় বিমান বাহিনী এই ব্যবস্থাকে ‘সুদর্শন চক্র’ নামে অভিহিত করেছে, যা ৩৮০ কিলোমিটার দূরত্বে শত্রুপক্ষের স্ট্র্যাটেজিক বোমারু বিমান, জেট, গুপ্তচর বিমান, মিসাইল এবং ড্রোন ধ্বংস করতে সক্ষম।ভারত সরকারের তথ্য অনুযায়ী, এস-৪০০ সরবরাহ ২০২৩ সালের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সরবরাহ শৃঙ্খলা ও উৎপাদন প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ায় এটি বিলম্বিত হয়েছে।

২০২১ সালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এক বিবৃতিতে বলেছিল, ‘এস-৪০০ মিসাইল একটি শক্তিশালী ব্যবস্থা, যা বৃহৎ এলাকায় কার্যকর বিমান প্রতিরক্ষা প্রদান করে। এর প্রবর্তন দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষমতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করবে।’ এই ব্যবস্থা ন্যাটো সদস্যদের জন্যও একটি বড় হুমকি হিসেবে বিবেচিত হয়, কারণ এটি আধুনিক যুদ্ধবিমানসহ প্রায় সব ধরনের বায়বীয় হুমকি মোকাবিলা করতে পারে।এস-৪০০ ব্যবস্থার তিনটি প্রধান উপাদান রয়েছে: মিসাইল লঞ্চার, শক্তিশালী রাডার এবং কমান্ড সেন্টার। এটি একই সঙ্গে ৩৬টি লক্ষ্যে আঘাত করতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে যুদ্ধবিমান, ক্রুজ মিসাইল, ব্যালিস্টিক মিসাইল এবং ড্রোন। এর ৪৮এন৬ই৩ মিসাইল ২৫০ কিলোমিটার পরিসরে এবং ৯এম৯৬ই/ই২ মিসাইল ৪০-১২০ কিলোমিটার পরিসরে দ্রুতগামী লক্ষ্য ধ্বংস করতে সক্ষম। এই ব্যবস্থা ৩০ কিলোমিটার উচ্চতায় হুমকি মোকাবিলা করতে পারে এবং ইলেকট্রনিক যুদ্ধ পরিবেশে জ্যামিং প্রতিরোধ করতে সক্ষম।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পাকিস্তান-সমর্থিত জঙ্গি গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত অপারেশন সিঁদুর শুরু করে।পাকিস্তান এর প্রতিক্রিয়ায় ভারতের সামরিক ঘাঁটি ও শহরগুলোতে হামলা চালায়, যা এস-৪০০ব্যবস্থা দ্বারা নিষ্ক্রিয় করা হয়।