আসছে নতুন যুগের ‘ডিজিপিন’

Spread the love

প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পরেই ভারতকে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। ২০১৪ সালের পর থেকে দেশ একের পর এক ধাপ এগিয়েছে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার পথে। এবার ভারতীয় ডাক বিভাগও চালু করে দিল দুটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। একটি হল ‘নো ইয়োর ডিজিপিন’ এবং অন্যটি ‘নো ইয়োর পিনকোড’। কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ বাড়ির ঠিকানার জন্য বিশেষ ১২ সংখ্যার একটি পিন চালু করা হয়েছে। ফলে চিঠি বা পার্সেল পৌঁছে দেওয়ার পরিষেবার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসতে চলেছে বলে মনে করছে ভারতীয় ডাক বিভাগ। 

ডিজিপিন কী?

নয়া এই ব্যবস্থায় পিনকোডের পরিবর্তে ব্যবহার করা হবে একটি আলফা নিউমেরিক ১২ অঙ্কের সংখ্যা।এই সংখ্যাটিকে ‘ডিজিপিন’ নামে বর্ণনা করা হয়েছে।ডিজিপিন হল ডাক বিভাগের একটি প্রকল্প, যা তাদের ‘অ্যাড্রেস অ্যাজ এ সার্ভিস’ দৃষ্টিভঙ্গীর অংশ। এই পরিষেবার লক্ষ্য হল ঠিকানা সংক্রান্ত ডেটা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ব্যবহারকারী, সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি সংস্থাগুলির মধ্যে নিরাপদ ও কার্যকর যোগাযোগ নিশ্চিত করে। জানা গিয়েছে, ডাক বিভাগ দেশের জন্য একটি উপযুক্ত এবং জিওকোডেড ঠিকানা কাঠামো তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। এর উদ্দেশ্য হল, ঠিকানা শনাক্তকরণ সহজ করা এবং নগর-কেন্দ্রিক সরকারি ও বেসরকারি পরিষেবার কার্যকর ডেলিভারি করা। 

ডিজিপিন তৈরি

ভারতীয় ডাক বিভাগের মতে, ‘ডিজিপিন’ নামক এই নতুন ঠিকানা ব্যবস্থা চালু করার নেপথ্যে রয়েছে আইআইটি হায়দরাবাদ এবং ইসরো। যার একমাত্র লক্ষ্য হল, দেশের সঠিক ডিজিটাল ঠিকানা পরিকাঠামোকে উন্নত করে গড়ে তোলা। তার জন্য গোটা দেশকে ৪ মিটার x ৪ মিটারের ছোট ছোট অংশে বিভক্ত করা হয়েছে। আর এই ১৬ বর্গমিটারের নিরিখে মেপে প্রতিটি অংশকে নির্দিষ্ট ডিজিপিন দেওয়া হয়েছে। বাদ যাবে না সমুদ্র বা উপকূল সীমান্ত। এর ফলে যে সব এলাকায় এতদিন ঠিকানা না থাকার জন্য সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হতে হত সেখানেও চালু হবে এই পদ্ধতি। 

লাস্ট-মাইল ডেলিভারি

এর ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সঠিকভাবে লাস্ট-মাইল ডেলিভারি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে, যেসব এলাকা সাধারণভাবে ঠিকানা ছাড়াই থাকে এবং খুঁজে পাওয়া কঠিন। ডিজিপিন একটি ফিজিক্যাল লোকেশনের জন্য একটি ডিজিটাল উপস্থাপন দেয় এবং সেই সঙ্গে একটি স্থিতিশীল অবস্থান শনাক্তকরণ করার ব্যবস্থা করে দেয়। এটি বর্তমান ব্যবস্থাকে আরও নির্ভুল এবং স্থায়িত্ব দেয়। কোনও জায়গার জন্য ডিজিপিন জানতে হলে ‘নো ইয়োর ডিজিপিন’ পোর্টালে যেতে হয়, যা একটি নির্দিষ্ট স্থানাঙ্ক ব্যবহার করে একটি ১০-অক্ষরের পিন তৈরি করে। এই পোর্টালটি কোনও ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ করে না । ফলে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা সুরক্ষিত থাকে। ডিজিপিন বিভিন্ন খাতে সঠিক পরিষেবা দিতে সাহায্য করবে এবং জরুরি পরিষেবা দেওয়ার সময় কমিয়ে দেবে।

কীভাবে পাওয়া যাবে ডিজিপিন?

এখন সকলের মনে প্রশ্ন আসতেই পারে কীভাবে কোন ব্যক্তি নিজের বাড়ির ডিজিপিন খুঁজে বের করবে। সেক্ষেত্রে প্রথমে ডিজিপিনের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে। পেজটি খোলার পর, সেখানে সম্পূর্ণ ঠিকানা বা জিপিএসের অবস্থান লিখতে হবে। ঠিক কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সিস্টেমটি আপনার অবস্থানের উপর ভিত্তি করে আপনাকে ১২-অক্ষরের কোড দেবে।আর সেই ১২-অক্ষরের কোডটি হবে সেই ব্যক্তির ডিজিপিনের ঠিকানা। ইতিমধ্যেই ডাক বি‌ভাগের পক্ষ থেকে ডিজিপিনের পোর্টাল ও অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ব্যবস্থাটি প্রাথমিক ভাবে পরীক্ষামূলক ভাবে কার্যকর করার কথা চিন্তা করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *