ইউনুসের দেশের ২ ‘চিকেন নেক’ নিয়ে হুঙ্কার হিমন্তর

Spread the love

‘বাংলাদেশ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে রংপুর।’ প্রতিবেশী দেশের জোড়া চিকেন নেকের মানচিত্র প্রকাশ করে মহম্মদ ইউনুসকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা।সম্প্রতি বাংলাদেশের দু’টি চিকেন নেক নিয়ে সুর চড়িয়েছিলেন তিনি। এবার সে দেশের মানচিত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিলেন, ভারতের ‘চিকেন নেক’ নিয়ে যারা ভয় দেখানোর চেষ্টা করে তাদের মনে রাখা উচিত নিজের দেশের অবস্থাও।

এক্স হ্যান্ডেলে হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানান, ‘বাংলাদেশের দু’টি চিকেন নেক রয়েছে। যেগুলি আদৌ নিরাপদ নয়। প্রথমটি হল ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ উত্তর বাংলাদেশ করিডোর – দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম গারো পাহাড় পর্যন্ত বিস্তৃত। সেখানে যে কোনও বিঘ্ন পুরো রংপুর বিভাগকে বাংলাদেশের বাকি অংশ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে।দ্বিতীয়টি হল, দক্ষিণ ত্রিপুরা থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ চট্টগ্রাম করিডোর। ভারতের চিকেন নেকের চেয়েও ছোট এই করিডোরটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক রাজধানী এবং রাজনৈতিক রাজধানীর মধ্যে একমাত্র সংযোগস্থল।’ অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি কেবল ভৌগোলিক তথ্য উপস্থাপন করছি, যা কিছু মানুষ ভুলে যেতে পারে। ভারতের শিলিগুড়ি করিডোরের মতো, আমাদের প্রতিবেশী দেশটিতেও ২ টি সরু করিডোর রয়েছে।’

গত বুধবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে, ‘ভারতের সংবেদনশীল শিলিগুড়ি করিডোর, যা ‘চিকেন নেক’ নামেও পরিচিত। এই ব্যাপারে বাংলাদেশের আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে। আমি আগেও এই বিষয়ে সতর্ক করেছিলাম।’ হিমন্ত বলেছিলেন, ‘যদি বাংলাদেশ আমাদের চিকেন নেককে আক্রমণ করে, তাহলে আমরা বাংলাদেশের দুটো চিকেন নেকেই আক্রমণ করব।’ ফের নতুন করে হিমন্তের হুঁশিয়ারি, শুধুমাত্র ভৌগোলিক বিষয়গুলি তিনি তুলে ধরছেন কারণ অনেকেই এগুলি ভুলে যায়। অর্থাৎ নাম না করে মহম্মদ ইউনুসকেই বার্তা দিলেন হিমন্ত।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের চিত্র বদলে গিয়েছে। উত্তর-পূর্বের ৭ রাজ্যের সঙ্গে গোটা ভারতের সংযোগ করে শিলিগুড়ি করিডর। চিনের আধিকারিকরা এসে জায়গাটি পরিদর্শনও করে গিয়েছে বলেও সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, সীমান্তবর্তী রংপুরের লালমনিরহাট জেলায় বেজিংয়ের সহায়তায় বায়ুসেনা ঘাঁটি তৈরি করতে চাইছে ঢাকা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই রংপুর ভারতীয় সীমান্ত থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে। সূত্রের খবর, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছেও এই বায়ুসেনা ঘাঁটি নির্মাণের খবর এসেছে। গোটা পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ইউনুসকে ফের কড়া বার্তা দিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী।

শিলিগুড়ি করিডোর প্রায় ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ। এটি ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিকে ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে সংযুক্ত করার একমাত্র পথ। নিরাপত্তার দিক থেকে এই এলাকাটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। এর আশেপাশেই রয়েছে নেপাল এবং বাংলাদেশ। যদিও ভুটান এই করিডোরের উত্তর দিকে অবস্থিত। শিলিগুড়ি শহরে অবস্থিত এই করিডর ভূকৌশলগত দিক দিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যার তুলনা করা চলে মুরগির গলার সঙ্গে। সমরশাস্ত্রের সূত্র মেনে ভারতের মতো মহাশক্তিধর দেশকে দুর্বল করতে এই শিলিগুড়ি করিডরকেই পাখির চোখ করেছে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন। তিনটি দেশের সীমান্ত এক জায়গায় মেশায় এই পথেই অস্ত্রশস্ত্র, মাদক ও জাল নোট ভারতে পাচার করার ছক কষেছে জেহাদিরা। পাশাপাশি সীমান্তের ছিদ্রপথে সন্ত্রাসবাদীদের এদেশে প্রবেশের রাস্তা তৈরি করারও পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। এই অঞ্চলকে ভারতের থেকে আলাদা করে দিতে চায় চিনও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *