কিছু দিন আগেই চিনের সফরে গিয়ে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস তুলে ছিলেন ভারতের ‘সেভেন সিস্টার্স’ অর্থাৎ উত্তর পূর্বের ৭ রাজ্যের প্রসঙ্গ। সেবার তাঁর কথায় এসেছিল সমুদ্র এলাকার ‘অভিভাবক’ প্রসঙ্গও। এবার নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের এক বৈঠকে ফের সেভেন সিস্টার্স উঠে এল বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্নদ ইউনুসের কথায়। ঘটনা নিয়ে চর্চা শুরু হতেই অবস্থান নিজেই স্পষ্ট করলেন ইউনুস। চট্টোগ্রামের সভায় গিয়ে তিনি এই বিষয়ে ফের মুখ খুলে তাঁর বার্তা দেন।
নেপালের ‘হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস’ র ডেপুটি স্পিকারের সঙ্গে সদ্য বৈঠক করেন মহম্মদ ইউনুস। সেখান তিনি একটি ‘সমন্বিত অর্থনৈতিক স্ট্র্যাটেজি’র কথা তোলেন। মহম্মদ ইউনুসের দফতরে তরফে এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে লেখা হয়,’ অধ্যাপক ইউনুস অভিন্ন অবকাঠামো এবং জ্বালানি উদ্যোগের মাধ্যমে আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করার তৎপরতার উপর জোর দেন।’ ওই পোস্টেই উল্লেখ করা রয়েছে ইউনুস বলেছেন, ‘বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান এবং সেভেন সিস্টার্সের জন্য একটি সমন্বিত অর্থনৈতিক পরিকল্পনা থাকা উচিত।’’পোস্টের পরের লাইনে লেখা রয়েছে, ‘সেভেন সিস্টার্স বলতে তিনি ভারতের উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলির কথা বলেছেন।’ ওই পোস্ট বলছে, ইউনুস নেপালের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ওই বৈঠকে আরও বলেছেন। তিনি বলেন,’ আমাদের আলাদা থাকার চেয়ে একসাথে থাকার মধ্যে অনেক বেশি কিছু পাওয়ার আছে।’

প্রসঙ্গত ওই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে, বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে জলবিদ্যুৎ সহযোগিতা বৃদ্ধির উপর আলোকপাত করা নিয়ে। এই চুক্তি গত অক্টোবরে স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সেই বৈঠকে আসে ‘বাংলাদেশ-নেপাল-ভারত ত্রিপক্ষীয় বিদ্যুৎ বিক্রয় চুক্তি’র কথাও। বৈঠকে উভয় পক্ষই বৃহত্তর আকারে জলবিদ্যুৎ উদ্যোগের ওপর জোর দিয়েছে। তবে এই বৈঠকে, ভারতের উত্তর পূর্বের সাত রাজ্যের নাম ফের একবার ইউনুস তোলায় তা দুই দেশের সম্পর্কে কোনও প্রভাব ফেলবে কি? এই জল্পনার মাঝেই এল ইউনুসের পরের বক্তব্য।
এদিন বাংলাদেশের চট্টোগ্রামে মহম্মদ ইউনুস পৌঁছন তাঁর সরকারি কর্মসূচি ঘিরে। সেখানে তিনি চট্টোগ্রাম বন্দর নিয়ে বেশ কিছু বক্তব্য রাখেন। আর সেই বক্তব্যের মাঝেই ইউনুসের ভাষণে ফের একবার এল সেভেন সিস্টার্স। তবে এবার তিনি জানালেন, কেন নেপালের সঙ্গে বৈঠকে তিনি ভারতের উত্তর পূর্বের সাত রাজ্যের কথা বলেছিলেন।অনুষ্ঠানে তিনি চট্টোগ্রাম বন্দরকে বিশ্বমানের বন্দর হিসাবে গড়ে তোলার কথা বলেন। তিনি বলেন,’ যদি আমাদের বাংলাদেশের অর্থনীতির পরিবর্তন করতে হয়, তাহলে চট্টগ্রাম বন্দরই হলো আশার আলো।’ তাঁর দফতরের তরফে এক্সপোস্টে বলা হয়েছে,চট্টোগ্রামকে বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃদয় বলে বর্ণনা করেছেন ইউনুস। তিনি বলেন,’যদি এই হার্ট দুর্বল হয়, তাহলে কোনও চিকিৎসকই এটিকে আরও ভালোভাবে কাজ করাতে পারবেন না।’