ইরান-ইজরায়েলের ঝামেলায় খসতে পারে বেশি টাকা! কী কী প্রভাব?

Spread the love

ইরান-ইজরায়েল সংঘাত ক্রমশ যুদ্ধের দিকে মোড় নিচ্ছে। উত্তেজনা বাড়ছে মধ্যপ্রাচ্যে। এই আর এই পরিস্থিতিতে ভারত-সহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। যা যথেষ্ট দুশ্চিন্তার। প্রভাব পরোক্ষভাবেও হলেও পড়ছে। হু হু করে পড়তে শুরু করেছে শেয়ার বাজার। আশঙ্কা করা হচ্ছে, মধ্য়প্রাচ্য়ের অস্থিরতার জেরে বাড়তে পারে তেলের দামও।এছাড়াও দুই দেশের সংঘাত বড় প্রভাব ফেলতে চলেছে বিশ্বব্যাপী।

তেলের দাম বৃদ্ধি

ইরান-ইজরায়েল সংঘাত বিশ্ববাজারে তেলের দামের উপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। শুক্রবার ইজরায়েলের প্রথম দফা হামলার পরপরই আন্তর্জাতিক বাজারে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৬ ডলার বেড়ে পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭৮ ডলার প্রতি ব্যারেল ছাড়ায়। ইরান প্রতিদিন প্রায় ৩.৩ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উৎপাদন করে, যার মধ্যে ৮০ শতাংশই চিন আমদানি করে। হরমুজ প্রণালী দিয়ে প্রতিদিন ২০ মিলিয়নেরও বেশি ব্যারেল তেল পরিবাহিত হয়, এবং এই রুট বন্ধ হলে তা বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সরবরাহকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করতে পারে।

আকাশসীমা বন্ধ

এই সংঘাতের জেরে আকাশপথে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। ইজরায়েলের হামলার পরপরই ফ্লাইট ট্র্যাকিং সাইটগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ইরানের আকাশে একপ্রকার শূন্যতা নেমে আসে। ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে চলাচলকারী বহু বিমান ইরানকে এড়িয়ে বিকল্প রুটে চলাচল করতে থাকে। এতে যাত্রার সময় বৃদ্ধি, জ্বালানি খরচ বাড়ে এবং ফ্লাইট বিলম্বের মতো বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলোর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিমান চলাচলে বিশৃঙ্খলা

বিমান চলাচলের এই বিশৃঙ্খলা আরও ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। উদাহরণস্বরূপ, মুম্বই থেকে লন্ডনগামী একটি এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান আকাশপথে তিন ঘণ্টা থাকার পর ফিরে আসতে বাধ্য হয়। সংস্থাটি জানায়, ইরানের আকাশসীমা বন্ধ থাকায় অন্তত ডজনখানেক ফ্লাইট রুট পরিবর্তন বা বাতিল করা হয়েছে। ইজরায়েল ও ইরান উভয় দেশই তাদের আকাশসীমা ‘লকডাউন’ ঘোষণা করেছে।

পরমাণু আলোচনা

এই সংঘাতের অন্যতম বড় কূটনৈতিক প্রভাব পড়েছে পরমাণু আলোচনার ওপর। ইজরায়েলের হামলার পর ইরান জানিয়ে দেয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে কোন আলোচনারই আর অর্থ নেই। তেহরান অভিযোগ তোলে, যুক্তরাষ্ট্র ইজরায়েলের হামলার অনুমোদন দিয়েছে। যদিও ওয়াশিংটন সেই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং রাষ্ট্রসংঘে জানিয়েছে আলোচনার দরজা এখনও খোলা রয়েছে।

যুদ্ধের বিস্তৃতি

সবচেয়ে বড় শঙ্কা-এটি একটি বিস্তৃত যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে। হামাস, হিজবুল্লাহ, হুতি বিদ্রোহী-সহ ইরান-সমর্থিত নানা গোষ্ঠী ইতিমধ্যে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে সক্রিয়। যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ছে সিরিয়া, জর্ডান ও ইয়েমেনের আকাশেও। এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ অন্যান্য দেশগুলো হয়তো সরাসরি এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে। যদি তা ঘটে, তবে এটি কেবল পশ্চিম এশিয়া নয়, বরং গোটা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *