উপবাসে আলিঙ্গন মৃত্যুকে! কী এই নিয়ম?

Spread the love

বয়স মাত্র তিন বছর। মধ্য়প্রদেশের ইন্দোরের বাসিন্দা। স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করল ওই একরত্তি। সান্থারা প্রথা মেনে স্বেচ্ছায় মৃত্যু বরণ করল ওই শিশু।

৩ বছর ৪ মাস ১ দিন বয়সি বিয়ানা জৈন। গত ২১ মার্চ জৈন সন্ন্যাসী ও পরিবারের সামনে সে সান্থারা গ্রহণ করে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে তার ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে। এরপর এই বছরের প্রথম দিকে মুম্বইতে তার অপারেশন হয়। প্রথমদিকে সে কিছুটা ভালো হয়ে গেলেও তার অবস্থান ক্রমশ অবনতি হচ্ছিল। এরপর মার্চ মাসে তার শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হচ্ছিল।

এরপর তার বাবা মা আধ্যাত্মিক গুরুর সঙ্গে কথা বলেন। রাজেশ মুনি মহারাজের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। শিশুর বাবা মা দুজনেই আইটিতে কর্মরত।

বাবা পীযুষ জৈন কথা বলেছেন দৈনিক ভাস্কর পত্রিকার সঙ্গে। তিনি জানিয়েছেন, আধ্যাত্মিক পরিপূর্ণতার একটা অনুভূতি হয়েছিল। কিন্তু আমাদের একমাত্র সন্তানকে হারানোর যন্ত্রণাটাও ছিল।

কী এই সান্থারা?

অনশনের মধ্য়ে দিয়ে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া, এটাই জৈন ধর্মে সান্তারা।

নিউজ ১৮ ইংলিশের প্রতিবেদন অনুসারে এটা জৈন ধর্মের একটা প্রাচীন রীতি। উপবাসের মাধ্যমে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করা হয় এই রীতির মাধ্যমে। যখন জীবন আধ্যাত্মিকতায় পরিপূর্ণ হয়ে যায় তখন এই রীতি মানা হয়। মূলত অনেক বৃদ্ধ বয়সে ও প্রচন্ড গুরুতর অসুস্থতায় এই রীতি মানার অনুমতি দেওয়া হয়।

এটাকে আত্মশুদ্ধি বলে মনে করা হয়। কখনওই একে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয় না। জৈনধর্মের পুঁথিতে এটা উল্লেখ করা আছে।

এই রীতির মাধ্যমে ধর্মীয় মন্ত্রোচ্চারণ করা হয়, ৩০ মিনিট ধরে করা হয়েছিল। পরিবার তেমনটাই জানিয়েছে। তার ঠিক ১০ মিনিট পরে শান্তিতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে শিশু। জৈন ধর্মের গুরু রাজেশ মুনি মহারাজ ও রাজেন্দ্র মহারাজ এই অনুষ্ঠানে ছিলেন। এই প্রথম এত ছোট্ট কেউ এই রীতি মেনে আত্মশুদ্ধি করল। এটা রেকর্ড।

এদিকে এই রীতিকে ঘিরে নানা বিতর্ক রয়েছে। এটা ধরনের রীতি পালন কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। তবে ওই শিশুর বাবা জানিয়েছেন, আমরা জৈন ভাবধারায় ওকে বড় করছিলাম। পাখিকে খাওয়াতো, গোশালায় যেত, গুরুর সঙ্গে দেখা করত, পাকখান আবৃত্তি করত।

এদিকে জৈন সম্প্রদায় ওই দম্পতিকে ধন্য়বাদ জানিয়েছে। আধ্যাত্মিকতার প্রতি তাঁদের আস্থার কথা বিবেচনা করে। রেকর্ড বুকেও নাম উঠেছে ওই শিশুর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *