পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে রবিবার রাতে বাওলা গ্রাম থেকে আরও এক যুবককে গ্রেফতার করেছে হরিয়ানার নুহ জেলার পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার যৌথ দল। ধৃত নুহ জেলার কাঙ্গারকা গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ তারিফ। তারিফ শুধু পাকিস্তানেই যাননি, প্রতিবেশী দেশটিতে যাওয়ার জন্য আরও ৩০ জনের ভিসা করিয়েছিলছেন।
এর আগে শনিবার রাজাকা গ্রাম থেকে ২৪ বছর বয়সি আরমানকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারিফ ও আরমান, এই দুজনের বিরুদ্ধে পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সিম কার্ড সরবরাহ এবং সামরিক কার্যক্রমের তথ্য ভাগ করে নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। তারিফের বিরুদ্ধে সদর তাওদু থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তারিফকে আপাতত সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সোমবার জিজ্ঞাসাবাদের সময় তারিফ জানান, দিল্লিতে পাকিস্তান হাইকমিশনের এক কর্মীকে সিম কার্ড পাইয়ে দিয়েছিলেন তিনি। উল্লেখ্য, এই তারিফ গ্রামেই একজন কোয়াক ডাক্তার। সূত্রের খবর, তারিফ পুলিশকে জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে তিনি প্রথমবার ভিসার জন্য দিল্লিতে পাক হাই কমিশনে গিয়েছিলেন। ভিসার জন্য আবেদন করার পর এক পাকিস্তানি কর্মকর্তা তার সাক্ষাৎকার নেন। কয়েকদিনের মধ্যে কল আসবে বলে মোবাইল নম্বরও নেন তিনি।
সাক্ষাৎকারের তিন-চার দিন পর পাকিস্তান হাইকমিশনের এক কর্মকর্তার ফোন পান তিনি। ভিসা দেওয়ার পরিবর্তে দুটি সিম কার্ড আনতে বলেন তিনি। সিম কার্ড দেওয়ার পরই ভিসা দেওয়া হয়। তারিফ তার গ্রাম ও আশপাশের এলাকা থেকে দুটি সিম কার্ডের ব্যবস্থা করে পরদিন পাকিস্তান দূতাবাসে যান। সেখানে তিনি আসিফ বালোচ নামে এক পাকিস্তানি কর্মকর্তাকে দুটি সিম কার্ড দেন। এরপরই ওই কর্মকর্তা ভিসা ইস্যু করেন।

মহম্মদ তারিফ ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৩০ জনের বেশি মানুষকে ভিসা পাইয়ে দিয়েছেন। বিনিময়ে তিনি কমিশন পেতেন। ভিসার জন্য মাথাপিছু ১০ থেকে ১১ হাজার টাকা নিতেন তিনি। সূত্র জানায়, সোমবার থেকে তারিফের গ্রেফতারের একটি ভিডিয়ো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে তিনি দাবি করছেন, ২০১৮ সাল থেকে অর্থাৎ সাত বছর ধরে পাকিস্তানের হয়ে কাজ করছেন তিনি। পুলিশের সন্দেহ, অভিযুক্ত যাঁদের ভিসা পাইয়ে দিয়েছিলেন, তাঁরাও গুপ্তচরবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত কি না।
সূত্রের খবর, গ্রেফতারের সময় পুলিশকে দেখা মাত্রই নিজের মোবাইল ফোনে সেভ করা তথ্য ডিলিট করতে শুরু করেছিলেন তারিফ। তবে এই পাক চর কিছু করে ওঠার আগেই পুলিশ তাকে ধরে ফেলে। তদন্তে তার মোবাইল থেকে কিছু তথ্য মুছে ফেলা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে পাকিস্তানে গুপ্তচরবৃত্তির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকতে পারে।