এক ধাক্কায় ৩০ হাজার কর্মী ছাঁটাই! কোন টেক জায়ান্ট সংস্থার?

Spread the love

এক ধাক্কায় ৩০ হাজারের বেশি কর্মী ছাঁটাই করতে চলেছে টেক জায়ান্ট অ্যামাজন। আর এই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাচ্ছে মঙ্গলবার থেকেই। কোম্পানির একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। জানা গিয়েছে, অতিমারীর সময়ে অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করেছিল সংস্থা। ব্যায়ের ভার অধিক হতেই এবার ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করেছে।সূত্রের খবর, অ্যামাজনে মোট ১.৫৫ মিলিয়ন কর্মী রয়েছেন। যার মধ্যে কর্পোরেট এমপ্লয়ির সংখ্যা ৩৫০,০০০। তার প্রায় ১০ শতাংশ ছাঁটাইয়ের ভাবনা সংস্থার। এর আগে, ২০২২ সালে এই সংস্থায় বড় ছাঁটাই হয়েছিল। সেবার ২৭০০০ কর্মীর চাকরি যায়। তারপরে, এটিই হতে চলেছে অ্যামাজনের সবচেয়ে বড় ছাঁটাই পর্ব। নতুন করে কর্মী কমানোর পরিকল্পনা নিয়ে জানতে চাইলে রয়টার্সের কাছে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান অ্যামাজনের এক মুখপাত্র। যদিও গত দুই বছর ধরে ডিভাইস, যোগাযোগ এবং পডকাস্টিং-সহ একাধিক বিভাগে অ্যামাজন কর্মী ছাঁটাই পর্ব জারি রেখেছে। অক্টোবরের শুরুতেই জানা গিয়েছিল, সংস্থার মানবসম্পদ বিভাগ, যা অভ্যন্তরীণ ভাবে ‘পিপল এক্সপেরিয়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ (পিএক্সটি) নামে পরিচিত, সেখান থেকে প্রায় ১৫ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রস্তুতি চলছে।

মঙ্গলবার সকাল থেকে ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের ইমেলে বিষয়টি জানানো হবে। ইমেলের পর কর্মীদের সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ করা হবে, সে বিষয়ে সোমবার প্রশিক্ষণ নিতে বলা হয় সংশ্লিষ্ট টিমগুলির ম্যানেজারদের। অ্যামাজনের সিইও অ্যান্ডি জ্যাসি কোম্পানির ভেতরে অতিরিক্ত আমলাতন্ত্র বা জটিল প্রশাসনিক প্রক্রিয়া কমাতে কাজ করছেন। তিনি অভিযোগ জানানোর জন্য একটি গোপন লাইন চালু করেছেন যেখানে পাওয়া ১,৫০০ মতামতের ভিত্তিতে এখন পর্যন্ত ৪৫০টির বেশি প্রক্রিয়া পরিবর্তন করা হয়েছে। জুন মাসে জ্যাসি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের পরিমাণ বাড়ানো হলে ভবিষ্যতে আরও কিছু পদে ছাঁটাই হতে পারে বিশেষত যে সব কাজ পুনরাবৃত্তিমূলক ও সহজে স্বয়ংক্রিয় করা যায়। ই-মার্কেটার বিশ্লেষক স্কাই ক্যানাভস বলেন, ‘এই সর্বশেষ ছাঁটাইয়ের পদক্ষেপটি ইঙ্গিত দেয় যে, অ্যামাজন কোম্পানিটি এআই-এর দ্বারা যথেষ্ট পরিমাণে লাভবান হচ্ছে।’ আবার অন্যদিকে অ্যামাজন খুব কম সময়ে তার এআই কাঠামো তৈরি করতে যে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করেছে, তাতে কিছুটা ক্ষতি হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এর ফলে একটু চাপের মধ্যে রয়েছে সংস্থা।’

এই দফার কর্মী ছাঁটাইয়ের পূর্ণ পরিধি তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট ছিল না। সূত্রগুলি জানিয়েছে, অ্যামাজনের আর্থিক পরিস্থিতির সঙ্গে সংগতি রেখে কর্মী ছাঁটাইয়ের সংখ্যা পরিবর্তিত হতে পারে। এর আগে ফরচুনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, মানবসম্পদ বিভাগকে প্রায় ১৫ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের লক্ষ্য দেওয়া হতে পারে। এই ছাঁটাইয়ের আরেকটি কারণ হল, চলতি বছরের শুরুর দিকে কর্মীদের সপ্তাহে পাঁচ দিন অফিসে ফিরিয়ে আনার যে কর্মসূচি শুরু হয়েছিল, তা প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সবচেয়ে কঠিন পদক্ষেপের একটি। বাড়িতে বসে কাজ করার কারণে যাঁরা প্রতিদিন অফিসে আসছেন না, তাঁদের কাউকে কাউকে বলা হচ্ছে, তাঁরা স্বেচ্ছায় অ্যামাজন ছেড়ে দিয়েছেন। তাঁদের কোন ছাঁটাই ভাতা ছাড়াই চলে যেতে হবে। এতে প্রতিষ্ঠানটির কিছু আর্থিক সঞ্চয়ের সুযোগ তৈরি হবে। প্রযুক্তি ক্ষেত্রে কর্মী ছাঁটাই ট্র্যাক করা ওয়েবসাইট Layoffs.fyi–এর হিসাব মতে, চলতি বছরে ২১২টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৯৮ হাজার কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। ২০২৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৫৩ হাজার। সোমবার অ্যামাজনের শেয়ার ১.২ শতাংশ বেড়ে ২২৬.৯৭ ডলারে দাঁড়িয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *