মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগে দাবি করেছিলেন, তিনি নাকি বাণিজ্যের জুজু দেখিয়েই কার্যত ভারতকে সংঘর্ষবিরতির জন্যে রাজি করিয়েছিলেন। যদিও ভারত সেই দাবি পুরোপুরি অস্বীকার করেছে। ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ভারত-পাক সংঘাতের আবহে বিভিন্ন সময়ে মার্কিন আধিরাকিদের সঙ্গে ভারতীয় নেতাদের কথা হয়েছে ঠিকই, তবে সেই সময় বাণিজ্য নিয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি। আর সংঘর্ষবিরতির প্রস্তাব সরাসরি পাকিস্তানের তরফ থেকে পেয়েছিল ভারত। তবে ট্রাম্প তো ট্রাম্প। তিনি তাই নিজের দাবিতে অনড়।
এই আবহে গতকাল ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের একবার ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতি নিয়ে মুখ খুললেন। তিনি বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এই সংঘর্ষবিরতি এক বড় সাফল্য। দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে এত ক্ষোভ ভালো নয়। যা (সংঘর্ষবিরতি) ঘটেছে তাতে আমরা খুব খুশি, আমি আশা করি এটি (সংঘর্ষবিরতি) অব্যাহত থাকবে।’ উল্লেখ্য, ভারত সরকারি ভাবে সংঘর্ষবিরতির ঘোষণা করার আগেই ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে পোস্ট করে বসেছিলেন এবং মধ্যস্থতার ‘ক্রেডিট’ দাবি করেছিলেন। যদিও ভারত বলেছে, ভারত-পাক সমঝোতায় তৃতীয় পক্ষের কোনও অবদান নেই। আর এবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর গলাতেও শোনা গেল ঠিক তেমনই সুর।
গতকাল পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের দাবি, পাক সেনা প্রধান তাঁকে ১০ মে সকালে জানান যে পাকিস্তান নাকি ভারতকে ‘ভরপুর জবাব’ দিয়েছে। এই আবহে ভারত নাকি সকালবেলাতেই সংঘর্ষবিরতির আবেদন জানিয়েছে পাকিস্তানের কাছে। তাই পাকিস্তানের কী করা উচিত, মুনির নাকি শেহবাজের কাছে তা জানতে চান। সেই সময় শেহবাজ নাকি মুনিরকে বলেছিলেন, পাকিস্তানের সেই সংঘর্ষবিরতির প্রস্তাব মেনে নেওয়া উচিত।

শেহবাজ বলেন, ‘জেনারেল মুনির আমাকে ফোন করে বলেন, পাকিস্তান ভারতকে ভরপুর জবাব দিয়েছে। এই আবহে ভারত সংঘর্ষবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে। তা নিয়ে আমার কী মতামত, তা জানতে চান জেনারেল মুনির। আমি তখন বলি, এর থেকে বড় সম্মানের কথা আর কী হতে পারে। আমরা শত্রুকে ভরপুর চড় মেরেছি, এখন তাদের মাথা ঘুরছে। তাই মুনিরকে বলি, আপনি তাদের সংঘর্ষবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করুন।’এদিকে শেহবাজ শরিফের এই সংঘর্ষবিরতি সংক্রান্ত ‘গল্পে’ বিভ্রান্তি আরও বাড়ল। ভারত জানিয়েছে, পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতির জন্যে আবেদন জানিয়েছিল ১০ মে দুপুর নাগাদ। এই আবহে সাড়ে ৩টের সময় দুই পক্ষের আলোচনা হয় এবং বিকেল ৫টা থেকে সংঘর্ষবিরতি কার্যকর করা হয়। এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলে যাচ্ছেন, তাঁর মধ্যস্থতায় ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতি সমঝোতা হয়েছে। যদিও ভারত তা অস্বীকার করেছে। আর এদিকে পাক প্রধানমন্ত্রী এবার বললেন, ১০ মে সকালে নাকি ভারত সংঘর্ষবিরতির প্রস্তাব দিয়েছিল। এই দাবি সর্বৈব মিথ্যা। তবে উল্লেখ্য, এখানে কোথাও তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতার কথা উল্লেখই করেননি।