এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে বেঁচে থাকা একমাত্র যাত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন প্রধানমন্ত্রী 

Spread the love

এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একমাত্র রমেশ কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে দেখা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এয়ার ইন্ডিয়ার এআই-১৭১ বিমানের ১১এ আসনে থাকা রমেশ সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান। বর্তমানে তিনি আহমেদাবাদ সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মোদী হাসপাতালের সি৭ ওয়ার্ডে গিয়েছিলেন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে। সেখানে ২৫ জন আহত ব্যক্তির চিকিৎসা চলছে। প্রধানমন্ত্রী সিভিল হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গেও কথা বলেন।

পুলিশ জানিয়েছে, রমেশ কুমার বিশ্বাস বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের ‘১১এ’ আসনে জরুরি এক্সিট দরজার কাছে ছিলেন। হাসপাতালের বিছানা থেকে ৪০ বছর বয়সি এই ব্যক্তি গণমাধ্যমকে জানান, তিনি একজন ব্রিটিশ নাগরিক এবং ভারতে পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর ভাইয়ের সঙ্গে ব্রিটেনে ফিরে যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনার পরে যখন আমি উঠি, আমার চারপাশে লাশ পড়ে ছিল। আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমি উঠে দাঁড়িয়ে দৌড় দিলাম। আমার চারপাশে বিমানের টুকরো ছিল। কেউ একজন আমাকে ধরে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।’

এর আগে তিনি জানিয়েছিলেন, বিমান টেকঅফের ৩০ সেকেন্ড পরই তিনি একটি বিকট আওয়াজ শুনতে পারেন, এবং এরপরই বিমানটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। আজ সকালেই প্রধানমন্ত্রী আহমেদাবাদ পৌঁছান এবং ২৪২ জন যাত্রী ও ক্রু বহনকারী বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারের দুর্ঘটনাস্থল দেখতে যান। মোদীর সফরসঙ্গী ছিলেন কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী রামমোহন নাইডু কিঞ্জারাপু, রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংঘভি এবং অন্যান্য আধিকারিকরা।

গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বোয়িং ৭৮৭ বিমান এই প্রথম এত বড় দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। ২০১৪ সালে এয়ার ইন্ডিয়া এই বিমানটি হাতে পেয়েছিল। দুর্ঘটনার কবলে পড়া বিমানটির ক্যাপ্টেন ছিলেন সুমিত সাভারওয়াল, তাঁকে সহায়তা করছিলেন ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ সুন্দর। বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদের বিজে মেডিক্যাল কলেজে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি ভেঙে পড়েছিল। তাতে অন্তত পাঁচজন এমবিবিএস শিক্ষার্থী, একজন পিজির আবাসিক চিকিৎসক এবং একজন সুপার স্পেশালিস্ট চিকিৎসকের স্ত্রী নিহত হয়েছেন এবং ৬০ জনেরও বেশি মেডিকেল শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (এফএআইএমএ) এ তথ্য জানিয়েছে। শহরের সিভিল হাসপাতালে ২৬৫টি মৃতদেহ আনা হয়েছে বলে এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন।

ডেপুটি পুলিশ কমিশনার কানন দেশাই সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা যে বার্তা পেয়েছি, সে অনুযায়ী ২৬৫টি মৃতদেহ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ডিজিসিএ-র তরফে জানানো হয়েছে, উড়ানের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানের তরফে মে ডে কল করা হয়। এটি কেবল জরুরি অবস্থার সময়ই করা হয়। এই মুহূর্তে বিমানটি কী ধরনের জরুরি অবস্থার সম্মুখীন হয়েছিল তা স্পষ্ট নয়। খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় স্থানীয় দমকল ও জরুরি বিভাগ। এ ছাড়া এনডিআরএফ দলও ঘটনাস্থলে ছিল। অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী রামমোহন নাইডুও আহমেদাবাদে পৌঁছেছেন। জানা গিয়েছে, ডিজিসিএ এবং এএআইবি অর্থাৎ এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো তদন্ত করছে। সেনাবাহিনীও সহযোগিতা করছে। এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিমান সুরক্ষা জোরদার করতে সরকার একটি উচ্চ পর্যায়ের মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি কমিটি গঠন করবে। অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী কে রামমোহন নাইডু বলেছেন, আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (আইসিএও) নির্ধারিত আন্তর্জাতিক প্রোটোকল মেনে বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (এএআইবি) দুর্ঘটনার আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *