দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় রয়েছে রাস্তা। বর্ষা এলেই দুর্ভোগ আরও চরমে ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দারা বহুবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও মেলেনি স্থায়ী কোনও সমাধান। সেই দাবিতেই এবার অভিনব প্রতিবাদ দেখালেন দিনহাটা-২ ব্লকের বুড়িরহাট-১ পঞ্চায়েতের কুকুরকচুয়া গ্রামের মহিলারা। মন্ত্রীকে সামনে পেয়েই তাঁকে কাদা ভর্তি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে বাধ্য করালেন।
বুধবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ গ্রামে জনসংযোগ কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন। তাঁকে সামনে পেয়েই কাদা ভর্তি রাস্তা দিয়ে হাঁটিয়ে নিজেদের দুর্দশা দেখিয়ে দেন স্থানীয়রা। মন্ত্রীকে ঘিরে মহিলাদের অনুরোধ, ‘আপনি নিজে হাঁটুন এই রাস্তায়, দেখুন আমরা কতটা সমস্যায় থাকি।’ মন্ত্রী প্রথমে একটু ইতস্তত বোধ করলেও মহিলাদের অনড় মনোভাব দেখে শেষমেশ সেই রাস্তা দিয়ে হেঁটেই যান মন্ত্রী। নিজের চোখে রাস্তার হাল দেখে চমকে ওঠেন তিনিও।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ বলরামপুর রোড থেকে কুকুরকচুয়া পর্যন্ত এই রাস্তাটি বছরের পর বছর পড়ে আছে সংস্কারের অভাবে। বর্ষায় জল জমে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে পুরো রাস্তা। এমনকী রাস্তায় বড় বড় গর্তও তৈরি হয়। বহুবার সরকারি কর্মীরা এলেও বাস্তবে কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। গ্রামের এক মহিলার অভিযোগ, প্রতিবার ভোটের আগে রাস্তা ঠিক করার আশ্বাস দেওয়া হয়। তারপর কেউ আর ফিরে তাকায় না। কতবার মাপজোখ করতে লোক এসেছে কিন্তু রাস্তা আজও সেই অবস্থায়। এবার মন্ত্রী নিজে হেঁটেছেন, তাই এবার রাস্তা সংস্কার হবে বলে আশাবাদী গ্রামবাসীরা।

মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ‘বর্ষার জন্যই রাস্তার এই অবস্থা। যতটা সম্ভব আমরা মেরামতির চেষ্টা করছি। আরও অনেক রাস্তা ঘুরে দেখার অনুরোধ পেয়েছি। তবে এই রাস্তাটি দেখেই বাকিগুলোর অবস্থাও আঁচ করতে পারছি।’ দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায় মন্ত্রীর এই জনসংযোগ ঘিরে মানুষের আগ্রহ তুঙ্গে। অনেকেই সামনে এসে পানীয় জল, সেচ, রাস্তাঘাট সহ একাধিক সমস্যার কথা জানাচ্ছেন। মন্ত্রীও প্রতিটি অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে শুনে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।