কামি রিতা শেরপা ভাঙলেন নিজেরই গড়া নজির

Spread the love

আবারও নিজের গড়া নজির ভাঙলেন কিংবদন্তি শেরপা কামি রিতা। ৫৫ বছর বয়সি নেপালের এই পর্বতারোহী ৩১ বার বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টে আরোহণ করলেন। মঙ্গলবার ভোর ৪ টেয় ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি দলের পথপ্রদর্শক শেরপা কামি রিতা ৮৮৪৯ মিটার (২৯০৩২ ফুট) উঁচু এভারেস্ট শীর্ষ স্পর্শ করেছেন। এভারেস্টজয়ীদের ইতিহাসে এ এক অনন্য নজির।

এভারেস্ট অভিযান সংগঠক সেভেন সামিট ট্রেকস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘শেরপা কামি রিতার পরিচয়ের প্রয়োজন নেই। তিনি শুধু নেপালের পর্বতারোহণের নায়ক নন, বরং এভারেস্টের বৈশ্বিক প্রতীক।’ কাঠমান্ডু পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনোজ যোশীর নেতৃত্বে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অ্যাডভেঞ্চার উইং এভারেস্ট অভিযানের একটি দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন শেরপা কামি রিতা। অন্যদিকে সেভেন সামিট ট্রেকসের চেয়ারম্যান মিংমা শেরপা জানিয়েছেন, ‘এই নতুন কীর্তি বিশ্বের সর্বোচ্চ সংখ্যক পর্বত আরোহণের রেকর্ডধারী হিসেবে শেরপা কামি রিতার মর্যাদাকে আরও দৃঢ় করে তুলবে -এটি এমন একটি রেকর্ড যা অন্য কেউ ধারে কাছেও পৌঁছাতে পারেনি। তিনি আরও জানান, কামি রিতা চূড়ায় আরোহণের পর নিরাপদ এবং স্থিতিশীল আছেন। এবার তিনি বেস ক্যাম্পে ফিরে যাচ্ছেন।তাঁর কথায়, ‘সব সময়ের মতো, কামি পর্বতে তার অতুলনীয় দক্ষতা এবং পেশাদারিত্ব প্রদর্শন করেছেন। আমরা তার কৃতিত্বের জন্য অত্যন্ত গর্বিত।

চলতি মাসের শুরুতে কামি রিতা এভারেস্ট অভিযানের কিছু মুহূর্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন, যার মধ্যে ছিল পুজোপাঠের অনুষ্ঠান। যা নিরাপদ ও সফল অভিযানের জন্য করা হয়।নেপালের পর্যটন বিভাগ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে এভারেস্ট-সহ বিভিন্ন পর্বতের জন্য ১,০০০-এর বেশি আরোহণ অনুমতি ইস্যু করা হয়েছে। গত কয়েক বছরে এভারেস্ট আরোহণের চেষ্টা ব্যাপক হারে বেড়েছে, তবে এটি জনসমাগম ও পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। গত বছর কর্তৃপক্ষ একটি নিয়ম চালু করে।

শেরপা কামি রিতা কে?

৫৫ বছর বয়সী শেরপা কামি রিতা ১৯৯৪ সালে প্রথমবার এভারেস্ট জয় করেন। তারপর থেকে প্রতি বছরই যেন শৃঙ্গজয়ের এক নিরবচ্ছিন্ন অধ্যায় রচনা করে চলেছেন তিনি। যারা পর্বতারোহণকে কেবল ক্রীড়া নয়, জীবনদর্শন মনে করেন, কামি রিতা তাদের কাছে এক জীবন্ত অনুপ্রেরণা। নেপালের সলুখুম্বু জেলার থামি গ্রামে জন্ম হয় কামি রিতার। তিনি বেড়ে উঠেছেন হিমালয়ের কোলে। শৈশব থেকেই তার পরিবার শেরপা গাইড হিসেবে কাজ করত, আর তিনিও বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে পেশাদার শেরপা হয়ে ওঠেন। তার এই দীর্ঘ পর্বতারোহণ-জীবনে শুধু এভারেস্টই নয়, পৃথিবীর অন্যান্য উচ্চতম পর্বত যেমন চো ইয়ু, লোৎসে, কাঞ্চনজঙ্ঘা ইত্যাদিতেও সফল অভিযান পরিচালনা করেছেন।প্রসঙ্গত, ১৯৫৩ সালে এই পথ ধরেই প্রথম এভারেস্টে আরোহণ করেছিলেন তেনজিং নোরগে এবং এডমন্ড হিলারি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *