কিশোরীকে ধর্ষণের পর খুন! দেহ ফেলে দেওয়া হয় নদীতে

Spread the love

বছর দুয়েক আগে নির্মম এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল জলপাইগুড়িতে। কিশোরীকে অপহরণ করার পরে ধর্ষণ এবং শেষে শ্বাসরোধ করে করে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল। শুধু তাই নয়, অভিযোগ উঠেছিল যে প্রমাণ লোপাটের জন্য কিশোরীর দেহ বস্তাবন্দী করে ফেলে দেওয়া হয়েছিল নদীতে। সেই ঘটনায় অভিযুক্তের কঠোর শাস্তি দিল আদালত। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বুধবার অভিযুক্ত যুবকের ফাঁসির সাজা দিল জলপাইগুড়ির বিশেষ পকসো আদালত। এদিন বিচারক রিন্টু সুর এই রায় ঘোষণা করতেই কান্নায় ভেঙে পড়ে নির্যাতিতার পরিবার।

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা মামলায় ১৬ জনের সাক্ষ্য ও একটি গোপন জবানবন্দির পরিপ্রেক্ষিতে আদালত অভিযুক্ত যুবককে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে। আজ বিচারক যুবককে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। পাশাপাশি, নিহত কিশোরীর পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ দিতে ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটিকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

মামলার বয়ান অনুযায়ী, জলপাইগুড়ি জেলায় এই ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর। জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি ব্লকে এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। নির্যাতিতা কিশোরী ওই এলাকারই বাসিন্দা। জানা যাচ্ছে, বাড়ির সামনে খেলছিল ওই কিশোরী। এরপর সে আচমকা নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে জানা যায়, তার প্রতিবেশী এক যুবক তাকে জল খাওয়ানোর নাম করে নিজের ঘরে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানেই ওই কিশোরীকে ধর্ষণ ও পরে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

ঘটনাটি ঘটেছিল গ্রামে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের দিন। এলাকা ছিল তুলনামূলকভাবে নির্জন। এই সুযোগকেই কাজে লাগানো হয়েছিল বলে অনুমান। পুলিশ তদন্তে জানতে পারে, খুনের পর প্রমাণ লোপাট করতে দেহটি বস্তায় ভরে একটি সাইকেলে চাপিয়ে দিকে ডুডুয়া নদীর দিকে রওনা দেয় অভিযুক্ত। নদীতে পৌঁছে বস্তাটি জলে ভাসিয়ে দেয়। তবে পরিবার মেয়েটিকে খুঁজে না পাওয়ায় ধূপগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করে। শেষে ডুডুয়া নদী থেকেই মেয়েটির মৃতদেহ উদ্ধার হয়।

ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অভিযুক্ত যুবককে শনাক্ত করে ও গ্রেফতার করে। একাধিক সাক্ষীকে জেরা করা হয় এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে আসে পুলিশের। পকসো আইনে মামলা দায়ের হয়। জলপাইগুড়ি আদালতে শুনানি শুরু হয়। পুলিশ দ্রুত তদন্ত শেষ করে চার্জশিট জমা দেয়। অবশেষে এদিন বিচার মিলল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *