দুই কিশোরীকে ‘যৌনদাসী’ করে রেখে বছরের পর বছর ধরে ধর্ষণের দায়ে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত একাধিক ব্যক্তিকে দোষীসাব্যস্ত করল ইংল্যান্ডের আদালত। যে সাতজনকে দোষীসাব্যস্ত করা হয়েছে, তাদের মধ্যে একজন পলাতক। বাকিরা জেলেই আছে। আদালত জানিয়েছে, পরবর্তীতে তাদের শাস্তির মেয়াদ ঘোষণা করা হবে। আর সেই শাস্তির মেয়াদটা দীর্ঘ হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিচারক।
বৃহত্তর ম্যাঞ্চেস্টারে রচডেলে সেই যৌন হেনস্থার ঘটনা ঘটেছিল। ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দুই কিশোরীকে অসংখ্যবার ধর্ষণ করা হয়েছিল। তাঁরা (বর্তমানে যুবতী) জানিয়েছেন, ১৩ বছর থেকেই তাঁদের ‘যৌনদাসী’ বা ‘সেক্স স্লেভ’ তৈরি করা হয়েছিল। পুরুষরা যখন চাইত, যেখানে চাইত, সেখানে তাঁদের ধর্ষণ করত। ‘নোংরা জায়গায় একইদিনে তাঁদের একাধিক পুরুষ’ ধর্ষণ করত বলেও জানিয়েছেন যুবতীরা।
এক যুবতী জানিয়েছেন, ২০০-র বেশি পুরুষের যৌন লালসার শিকার হয়েছিলেন। অপর এক যুবতী জানিয়েছেন, তাঁকে যৌনকর্মী হিসেবে চিহ্নিত করা হত। আদালতে জানানো হয়েছে, দুই কিশোরীকে নির্মমভাবে অত্যাচার করা হত। শহরের বাজারে কাজ করা লোকজন বা ট্যাক্সিচালকদের থাকতে দেওয়া হত তাঁদের। আইনজীবী জানিয়েছেন, গাড়ি, পার্কিং লট, গলি বা পুরনো গুদামঘরের মধ্যে তাঁদের ধর্ষণ করা হত।

ওই চক্রের মধ্যে মহম্মদ জাহিদ (৬৪), মুস্তাক আহমেদ (৬৭) এবং কাসির বশির (৫০) স্থানীয় বাজারে স্টল দিত। তারা সকলেই পাকিস্তানি-বংশোদ্ভূত। তিনজনের বাবা জাহিদ আবার কিশোরীদের বিনামূল্যে অন্তর্বাস দিত। নিয়মিত ধর্ষণের ‘উপহার’ হিসেবে কিশোরীদের টাকা, মদ, খাবার দিত জাহিদ। তাছাড়াও মহম্মদ শেহজাদ (৪৪), নাহিম আক্রম (৪৮) এবং নিসার হুসেনকেও (৪১) দোষীসাব্যস্ত করা হয়েছে। ওই দুই যুবতীর উপরে যে ভয়াবহ অত্যাচার চলেছিল, তা একেবারেই বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সংবাদসংস্থা এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দশকের পর দশক ধরে ইংল্যান্ডের বিভিন্ন শহরে হাজার-হাজার কিশোরী বা তরুণীকে ধর্ষণ করেছে এরকম লোকেরা। তারা মূলত শ্বেতাঙ্গ মেয়েদের টার্গেট করত, যারা শ্রমজীবী পরিবারের সদস্য হত। আর পরিবারে কোনও সমস্যা থাকত।