কৃষ্ণেন্দুর ‘সুইসাইড নোট’-এ হাতের লেখা মিলছে না

Spread the love

চিপস কাণ্ডে বিস্ফোরক দাবি পুলিশের। তাদের প্রাথমিক অনুমান, যে এক টুকরো কাগজে লেখা চিরকুটটিকে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র কৃষ্ণেন্দু দাসের ‘সুইসাইড নোট’ বলে দাবি করা হচ্ছে, তাতে গরমিলের সম্ভাবনা রয়েছে! পুলিশের চোখে সেই গরমিল প্রাথমিকভাবে ধরা পড়েছে বলেই সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে। পুলিশের তদন্তকারীরা মনে করছেন, ওই চিরকুটের উপরের এবং নীচের অংশের হাতের লেখা এক ব্যক্তির নাও হতে পারে!

গত ১৮ মে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়ার বাসিন্দা কৃষ্ণেন্দু দাসের। তার পরিবারের দাবি, অপমানে আত্মঘাতী হয়েছে ওই কিশোর। ছাত্রের মা সুমিত্রা দাস জানিয়েছিলেন, তাঁর ছেলে দোকানে চিপস কিনতে গিয়েছিল। কিন্তু, দোকানদার সেই সময়ে দোকানে ছিলেন না। কৃষ্ণেন্দু তাঁকে বেশ কয়েকবার ডাকাডাকি করে। কিন্তু, তাঁকে না পেয়ে দোকানের সামনে পড়ে থাকা একটি চিপসের প্যাকেট কুড়িয়ে নেয়। পরে সিসিটিভি ফুটেজেও তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।

এরপর সে যখন বাড়ির পথে সাইকেল চালিয়ে ফিরছিল, অভিযোগ – সেই সময়েই ওই দোকানের মালিক তথা সিভিক ভলান্টিয়ার শুভঙ্কর দীক্ষিত ছেলেটিকে প্রথমে মোটরবাইক নিয়ে তাড়া করেন। তারপর তাকে সকলের সামনে চোর অপবাদ দেন এবং কান ধরে ওঠবোস করান। এরপর কৃষ্ণেন্দুর মা সুমিত্রাকে সেখানে ডেকে পাঠানো হয়। সুমিত্রাও সকলের সামনেই ছেলেকে শাসন করেন। তারপর তাকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন।

দাবি করা হয়, এরপরই উপরোক্ত ‘সুইসাইড নোট’টি লিখে রেখে আত্মঘাতী হয় কৃষ্ণেন্দু। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই শুভঙ্কর দীক্ষিত, এমনকী তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধেও থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন সুমিত্রা। ছেলের মৃত্যুর জন্য তাঁদের সকলকে দায়ী করেছেন তিনি। তাঁর সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পাঁশকুড়া থানার পুলিশ।

কৃষ্ণেন্দুর বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে সেই ‘সুইসাইড নোট’টি সংগ্রহ করেছেন তদন্তকারীরা। এক টুকরো ওই সাদা কাগজের উপরের অংশে পরপর তিনটি লাইনে লেখা রয়েছে – ‘কৃষ্ণেদু দাস’, ‘রোল – 16’ এবং ‘শ্রেনী – সপ্তম’!

অনুমান করা হচ্ছে, চিরকুটের এই অংশে ব্যবহৃত পেনের নীল কালি, নীচের অংশে ব্যবহার করা পেনের নীল কালির থেকে আলাদা। এবং উপরের অংশের লেখায় বানাও ভুল রয়েছে। এমনকী, কৃষ্ণেন্দুর নামের বানানও সঠিক নেই।

এবার নীচের অংশে আসা যাক। সেখানে লেখা রয়েছে, ‘মা আমি বলেযাচ্ছি যে আমি কুড়কুড়াটি রাস্তার ধারে গুড়িয়ে পেয়েছিলাম চুরি করিনি’!

পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, চিরকুটের উপরের এবং নীচের অংশের হাতের লেখা এক ব্যক্তির নয়! তাদের এই লেখা নিয়েই সন্দেহ রয়েছে। তাই, প্রয়োজন হস্তরেখা বিশারদের সাহায্য় নেওয়া হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *