কোহলির সঙ্গে কী কথা হয়েছিল? প্রকাশ্যে আনলেন রবি শাস্ত্রী

Spread the love

টেস্ট ক্রিকেট থেকে হঠাৎ করেই বিরাট কোহলির(Virat Kohli) অবসরের ঘটনাটি এখনও হজম করতে পারছেন না তারকা ক্রিকেটারের ভক্তরা। ক্রিকেট ভক্তরা এখনও মনে করছেন, কোহলির এত বড় সিদ্ধান্তের পিছনে অবশ্যই বড় কোনও কারণ আছে। এর মাঝেই খবর পাওয়া যাচ্ছে, কোহলি এবং রোহিত শর্মার অবসরের পিছনে বড় হাত রয়েছে গৌতম গম্ভীরের। গম্ভীরই দলে দুই তারকাকে রাখতে চাননি। যাইহোক এসবরের মাঝেই কোহলির অবসর নিয়ে মুখ খুলেছেন টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তন প্রধান কোচ এবং বিখ্যাত ধারাভাষ্যকার রবি শাস্ত্রী। তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন, অবসরের আগে কোহলি তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলেন।

রবি শাস্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করেই বিরাট এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন
বিরাট কোহলির অবসরের পরেই, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বেশ কিছু প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল যে, ভারতের কিংবদন্তি ব্যাটার দীর্ঘ দিন ধরেই টেস্ট ফর্ম্যাটকে বিদায় জানানোর কথা ভাবছিলেন। বিরাট কোহলি এই বিষয়টি নিয়ে কেবল রবি শাস্ত্রীর সঙ্গেই কথা বলেছেন, যাঁকে তিনি সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করেন। বিরাট তাঁকে তাঁর পরামর্শদাতা হিসেবে দেখেন। আসলে বিরাট যখন টেস্ট অধিনায়ক ছিলেন, তখন প্রধান কোচ ছিলেন রবি শাস্ত্রী এবং দু’জনের মধ্যে বন্ধন ছিল অসাধারণ। তাই রবি শাস্ত্রীর সঙ্গে কোহলির আলোচনার বিষয়টি নিয়ে কারও মনেই কোনও সংশয় ছিল না।

কোহলির সঙ্গে কথা বলার বিষয়টি স্বীকার করেছেন শাস্ত্রী

রবি শাস্ত্রী আবার প্রকাশ করেছেন যে, তাঁর সঙ্গে কোহলি কথা বলার আগেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন। ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন প্রধান কোচের নতুন করে কোহলিকে বোঝানোর কিছুই ছিল না। এবং কোহলির কথা শুনে রবি শাস্ত্রী নিজেও একটা সময়ে মনে করেছিলেন, দীর্ঘতম ফর্ম্যাটটি ছেড়ে দেওয়ার এটাই তাঁর জন্য সঠিক সময়।

আইসিসি রিভিউতে জসপ্রীত বুমরাহের স্ত্রী এবং ক্রীড়া সঞ্চালক সঞ্জনা গণেশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রবি শাস্ত্রী সাফ বলে দেন, ‘আমি ওর সাথে এই বিষয়ে কথা বলেছিলাম, আমার মনে হয় (ওর ঘোষণার) এক সপ্তাহ আগে থেকেই ও ওর মন তৈরি করে ফেলেছিল। ও ভারতীয় ক্রিকেটকে সবটা দিয়েছে। এর জন্য ওর কোনও অনুশোচনা ছিল না। আমি একটি বা দু’টি প্রশ্ন করেছিলাম, এবং এটি একটি ব্যক্তিগত কথোপকথন ছিল, যা সকলেই জানেন, ও খুব স্পষ্ট ভাবে বলে দিয়েছিল, ওর মনে কোনও সংশয় নেই। ওর জন্যই আমি এটা ভাবতে বাধ্য হয়েছিলাম, হ্যাঁ, ওর সময় হয়ে গেছে। মন ওর শরীরকে বলে দিয়েছে যে, এখনই চলে যাওয়ার সঠিক সময়।’

ভারতের প্রাক্তন প্রধান কোচ আরও যোগ করেন, ‘যদি ও কিছু করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে, তাহলে ও ১০০% দিয়ে সেটা করবেই। এর আলাদা কিছু হবে না।’ কোহলিকে নিয়ে রবি শাস্ত্রীর দাবি, ‘একজন বোলার বা একজন ব্যাটসম্যান বা একজন খেলোয়াড় নিজের কাজটি শেষ করে, তার পর নিজের জায়গায় গিয়ে বসে পড়ে। কিন্তু কোহলি এমনটা করে না। যখন দল মাঠে নামে, তখন মনে হয় যেন ওকে সব উইকেট নিতে হবে, ওকে সব ক্যাচ ধরতে হবে, মাঠে সমস্ত সিদ্ধান্ত ওকে নিতে হবে। এত কিছু করে যে, আমার মনে হয় কখনও কখনও ওর বিশ্রান নেওয়া উচিত, না হলে ও ক্লান্ত হয়ে পড়বে। যদি ও বিভিন্ন ফর্ম্যাটে কতটা খেলতে চায়, তা ভাগ না করে, তাহলে অবশ্যই ক্লান্ত হবে।’

তবে রবি শাস্ত্রী দাবি করেছেন যে, কোহলির এই সিদ্ধান্তে তিনি অবাকই হয়েছেন। কারণ তিনি মনে করেন যে, বিরাট আরও ২-৩ বছর টেস্ট খেলতে পারতেন। তবে ভারতের প্রাক্তন কোচ এ কথাও স্বীকার করে নিয়েছেন যে, কোহলি মানসিক ভাবে ক্লান্তির পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন।

তাঁর মতে, ‘বিরাট আমাকে অবাক করে দিয়েছিল, কারণ আমি ভেবেছিলাম ও কমপক্ষে দুই-তিন বছর ও টেস্ট ক্রিকেট খেলতে পারবে। কিন্তু যখন ও মানসিক ভাবে ক্লান্ত এবং অতিরিক্ত পরিশ্রম করার ফলে, শরীর জবাব দিতে শুরু করে। শারীরি কভাবে এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে ফিট খেলোয়াড় হতে পারে ও। দলের অর্ধেক খেলোয়াড়ের চেয়েও ফিট থাকতে পারে, কিন্তু মানসিক ভাবে তুমি ক্লান্তি চলে আসে। আর সেই ক্লান্তি বোঝা হয়ে ওঠে শরীরকে বার্তা দেয়, এখানেই শেষ।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *