টলিউডের পয়লা সারির অভিনেত্রীদের তালিকায় পয়লা সারিতে নাম আসে ঋতাভরী চক্রবর্তীর। একাধিক হিট প্রোজেক্ট উপহার দিয়েছেন তিনি বাংলার দর্শকদের। এখন অবশ্য, টলিউড শুধু নয়, বলিউডেও পা রেখে ফেলেছেন ঋতাভরী। বৃহস্পতিবার ২৬ জুন অভিনেত্রীর ৩২ বছরের জন্মদিন। জানেন কি কোন স্কুলের ছাত্রী ছিলেন ঋতাভরী, কতদূর লেখাপড়া করেছেন তিনি?
ঋতাভরী চক্রবর্তী ক্লাস টেন অবধি পড়াশোনা করেন সল্টলেকের হরিয়ানা বিদ্যামন্দির থেকে। আর দশম শ্রেণির পরীক্ষার পরপরই তাঁর কাছে আসে ‘ওগো বধূ সুন্দরী’তে নায়িকা ললিতা চরিত্রে কাজ করার অফার। তবে লেখাপড়ায় ভীষণ ভালো ছিলেন ঋতাভরী, তাই সিরিয়ালের ১৫-১৬ ঘণ্টা শ্যুটিংয়ের পাশাপাশি, পরীক্ষা দেন ক্লাস টুয়েলভের। সঙ্গে খুব ভালো ফলাফলও করেন।
আসলে ঋতাভরীর কাজের অফার আসে আচমকাই। দিদি চিত্রাঙ্গদার তখন ক্লাস টুয়েলভ, রবি ওঝা প্রোডাকশনের ‘বউ কথা কও’-এর জন্য অডিশন দিতে গিয়েছিলেন। দিদিকে আনতে গিয়েছিলেন ঋতাভরী, তখন সবে ক্লাস টেনে উঠেছেন। তাঁকে দেখে পছন্দ হয়ে যায় প্রোডাকশনের। কাজের অফারও দেয়। তবে রাজি হন না মা শতরূপা।আর পরে যখন ওগো বধূ সুন্দরী শুরু হয়, তখন ললিতা হিসেবে প্রোডাকশন হাউজ অন্য কারও কথা ভাবতেও পারেননি। আর সেইসময় ক্লাস টেনের পরীক্ষা শেষ হওয়ায়, আর না করেননি অভিনেত্রীর মা-ও।
প্রায় আড়াই বছর চলেছিল ওগো বধূ সুন্দরী। দর্শকদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে ‘ললিতা’। অভিনেত্রীর দ্বিতীয় মেগা ছিল ‘চোখের তারা তুই’। যদিও এটির কাজ মাঝপথেই ছেড়েছিলেন ঋতাভরী। কারণ টানা ডেইলি সোপের শ্যুটিং করে ভীষণ ক্লান্ত বছর ১৮-র মেয়েটি। সঙ্গে কলেজে ক্লাসকরতে পারছেন না। দাদুর হুমকি আছে, আগে পড়াশোনা শেষ করে, তবেই পা রাখা যাবে অভিনয়ে।যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ঋতাভরী। সেখান থেকে দুর্দান্ত ফলাফল করে স্নাতক পাশ করেন। যদিও একেবারে নিজেকে সরিয়ে নেননি অভিনয় থেকে। সিরিয়াল না করলেও, টুকটাক থিয়েটার চলতে থাকে। কাজ করেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্য়ায়ের সঙ্গেও।

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতোকত্তর পাশ করেছেন ঋতাভরী। এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রীকে বলতে শোনা গিয়েছে, বাড়ি থেকে কোনোদিন ক্লাসে টপ করা নিয়ে চাপ দেওয়া হত না তাঁকে। কিন্তু ঋতাভরী নিজে সবসময় ভাবতেন, তাঁকে ফার্স্ট বা সেকেন্ড বা থার্ড হতেই হবে। নিজেই নিজের উপর প্রেসার দিতেন। ভালোবাসতেন লেখাপড়া করতে।
২০১৪ সালে চতুষ্কোন দিয়ে সিনেমায় কাজ শুরু ঋতাভরী চক্রবর্তীর। শ্রীমতী ভয়ংকরী, ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মোটি, ফাটাফাটি, বহুরূপীর মতো ধারাবাহিক উপহার দিয়েছেন তিনি দর্শকদের। তবে কাজের পাশাপাশি, বর্তমানে চর্চায় ঋতাভরীর ব্যক্তিগত জীবনও। কারণ ছাদনাতলায় যাচ্ছেন ‘বং ক্রাশ’।সুমিত অরোরা-র সঙ্গে বাঁধতে চলেছেন গাঁটছড়া। চলতি বছরের এপ্রিল মাসেই তাঁরা বাগদান করেন। সে খবর দিয়ে অভিনেত্রী লিখেছিলেন, ‘আমরা সারাজীবন একে অপরকে বিরক্ত করার ও ভালোবাসার পরিকল্পনায় রাজি হয়েছি। আমি ও আমার মিস্টার রাইট।’
বলিউডের একাধিক হিট সিনেমার চিত্রনাট্য লিখেছেন ঋতাভরীর হবু বর সুমিত আরোরা। খোদ কিং খান শাহরুখের সেই ব্লকবাস্টার ছবি ‘জওয়ান’ থেকে শুরু করে, ‘স্ত্রী’, ‘চন্দু চ্যাম্পিয়ান’, ‘গিন্নি ওয়েডস সিন্নি’, ‘৮৩’, ‘বেবি জন’, ‘দেবা’, ‘অল ইজ ওয়েল’,’হোয়াইট শার্ট’-এর মতো ছবির সংলাপ লিখেছেন তিনি। ‘পরী’ ছবির সেটে আলাপ হয়েছিল ঋতাভরী ও সুমিতের। তারপর ধীরে ধীরে প্রেম। মাঝে যদিও লম্বা সময় ব্রেকআপ। সেই সময় মনেরডাক্তার তথাগতর সঙ্গে ঋতাভরী সম্পর্কে জড়ান। তবে তথাগতর সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার পর, ফেরেন পুরনো প্রেমের কাছেই। আর এখন বিয়ে করার পালা।