জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ইন্ডিয়ান হেভেন প্রিমিয়ার লিগ (আইএইচপিএল)-এ ভয়ানক বিপর্যয়। জানা গেছে, উপত্যকায় খেলতে এসে ঘরবন্দি হয়ে পড়েন ক্রিস গেইল, জেসি রাইডার, মার্টিন গাপ্টিলের মতো তারকা ক্রিকেটাররা। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের নিয়ে আইএইচপিএল আয়োজনের উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয় ক্রিকেট ও পর্যটনকে ঘিরে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করা। কিন্তু এরমধ্যেই আয়োজকরা হোটেলের বিরাট অঙ্কের বকেয়া ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ। যার জেরে হোটেলেই আটকে পড়েন তারকা খেলোয়াড় ও আম্পায়াররা।
জানা গেছে, গত ২৫ অক্টোবর জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আট দল নিয়ে শুরু হয়েছিল আইএইচপিএল, যা শেষ হওয়ার কথা ছিল ৮ নভেম্বর। কিন্তু শনিবার সকালে খেলোয়াড়দের জানানো হয় ‘কারিগরি কারণে খেলা বাতিল।’ পরদিন সকালে হোটেলে থাকা খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা জানতে পারেন, আয়োজকেরা আগের রাতেই শ্রীনগর ত্যাগ করেছেন। হোটেল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, আয়োজকদের কাছ থেকে কোনও বিল পায়নি তারা। তখন প্রায় ৪০ জন খেলোয়াড় ও কর্মকর্তা হোটেলেই আটকে ছিলেন। ইংল্যান্ডের আম্পায়ার মেলিসা জুনিপার বলেন, ‘আয়োজকেরা হোটেল থেকেই পালিয়ে গিয়েছে। হোটেল, খেলোয়াড়, আম্পায়ার-কাউকেই টাকা দেয়নি। অবশেষে হোটেলের সঙ্গে সমঝোতা করে আমরা খেলোয়াড়দের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করছি। এভাবে ওদের আটকে রাখা অন্যায়।’ টাইমস অব ইন্ডিয়াকে শ্রীনগরের দ্য রেসিডেন্সি হোটেল-এর এক কর্মকর্তা জানান, ‘আয়োজকেরা গেইলদের মতো তারকাদের এনে কাশ্মীরের পর্যটন বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু রবিবার সকালে দেখি তারা হোটেল ছেড়ে গায়েব, বিল পরিশোধ না করেই।’

তবে ক্রিস গেইল আগেই বুঝতে পেরেছিলেন কোনও সমস্যা আছে। তাই তিনি শনিবার হোটেল থেকে চেকআউট করে বেরিয়ে যান। এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুসারে, প্রাক্তন ক্রিকেটার পারভেজ রাসুল বলেন, ‘ইংল্যান্ডের একজন আম্পায়ার ব্রিটিশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, কারণ কিছু খেলোয়াড়কে প্রথমে হোটেল থেকে বের হতেও দেওয়া হয়নি।’ টুর্নামেন্টটি গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করা হয়, যা শুরুতে কাশ্মীরজুড়ে যথেষ্ট আগ্রহ সৃষ্টি করেছিল। দলের পরামর্শক হিসেবে থাকা সুরিন্দর খান্না বলেছিলেন ‘কাশ্মীরের তরুণদের জন্য সোনালী সুযোগ’ এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ‘পরবর্তী উমরান মালিক বা পারভেজ রসুলকে খুঁজে বের করার।’ তবে শুরুতে গেইলদের উপস্থিতিতে কিছু দর্শক টানলেও পরে দর্শকসংখ্যা দ্রুত কমে যায়। টিকিটের দামও নামিয়ে আনতে হয়, স্পনসরদের অনাগ্রহসহ নানা জটিলতায় টুর্নামেন্টের ভিত্তিই নড়বড়ে হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত আয়োজকদের উধাও হয়ে যাওয়া সেই অনিশ্চয়তাকে চরম পরিণতিতে পৌঁছে দিয়েছে।