খোলাখুলি ইরানের পাশে না দাঁড়ানোর ব্যাখ্যা পুতিনের

Spread the love

ইরান-ইজরায়েল সংঘাতের মধ্যে মেগা এন্ট্রি নিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের তিনটি পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হামলার পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, ইরানের ফোরডো, নাতানজ এবং ইসফাহানে অবস্থিত তিনটি পরমাণুকেন্দ্রে ‘সফল’ হামলা চালিয়েছে সেনা। অন্যদিকে, রাশিয়ার সঙ্গে ইরানের সুসম্পর্ক দীর্ঘ বছরের। কিন্তু তারপরেও ইরানের সমর্থনে সেভাবে দাঁড়াতে দেখা যায়নি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে। কিন্তু কেন? সম্প্রতি এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন পুতিন।

বহু যুগ ধরে ভালো সম্পর্ক রয়েছে রাশিয়া ও ইরানের। তা সত্ত্বেও, ইরান ও ইজরায়েলের দ্বন্দ্বে রাশিয়া নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট। সেন্ট পিটার্সবার্গে ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক ফোরামে এই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে পুতিন বলেন, ‘আমি আপনাদের জানাতেই চাই যে পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়ন ও রাশিয়া ফেডারেশনের প্রায় ২০ লক্ষ লোক ইজরায়েলে বসবাস করেন। আজ এটা প্রায় রাশিয়াভাষী দেশে পরিণত হয়েছে। এবং নিঃসন্দেহে, রাশিয়ার সাম্প্রতিক ইতিহাসে আমরা এই বিষয়টা সবসময় দেখি।’ সঙ্গী রাষ্ট্রগুলির প্রতি রাশিয়ার কি তাহলে কোনও আনুগত্য নেই ? সমালোচকদের এই প্রশ্নকে তিনি উস্কানিমূলক বলে অভিযোগ করেছেন। পুতিন জানান, আরব দেশগুলি এবং ইসলামিক দেশগুলির সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধুত্বপূর্ণ। রাশিয়ার জনসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশই মুসলিম।

ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচির পক্ষে রাশিয়ার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে পুতিন বলেন, ‘আমরা কেবল কথায় নয়, বাস্তব পদক্ষেপেও ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচিকে সমর্থন করি। বুশেহারে আমরা একটি পরমাণু রিঅ্যাক্টর নির্মাণ করেছি। নানা চ্যালেঞ্জ ও ঝুঁকি সত্ত্বেও এর কাজ আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।’ মস্কো ইরানকে আরও বেশি সমর্থন দিতে পারত-এ বিষয়ে পুতিন প্রশ্ন তোলেন, ‘তাহলে কি ইরানের হয়ে আমরা যুদ্ধ করলে ঠিক মাত্রার সমর্থন দেওয়া হতো?’ এ সময় নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন রুশ নেতা বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই রাশিয়ার স্বার্থ ও আদর্শ রক্ষায় লড়াই করছি। আমাদের প্রতিপক্ষ ও ইরানের প্রতিপক্ষ-দুপক্ষই মূলত একই ধাঁচের শক্তি।’ তবে রাশিয়া মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় নামতে চায় না বলেও স্পষ্ট করেছেন পুতিন। তিনি বলেন, ‘আমরা কেবল কিছু ধারণা দিচ্ছি। যদি তেহরান ও পশ্চিম জেরুজালেম এগুলোতে সাড়া দেয়, আমরা তাতে খুশি হব।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই সপ্তাহ সময় নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই হুঁশিয়ারির ৭২ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে আচমকা যুদ্ধে নেমে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধের দশম দিনে ময়দানে নামে ত্রিশক্তি। স্থানীয় সময় শনিবার রাতে ইরানে হামলা চালায় মার্কিন সেনাবাহিনী। তবে এখানেই থেমে থাকতে রাজি নন ট্রাম্প। আগামীদিনের জন্য ইরানকে হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল ইরানের পরমাণু-ক্ষমতাকে ধ্বংস করা। বিশ্বের এক নম্বর সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্র যাতে পরমাণু হুমকি দিতে না পারে। এটা দেখার মতো সামরিক সাফল্য। ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক কেন্দ্রগুলিকে পুরোপুরি এবং সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। যে ইরান মধ্যপ্রাচ্যে দাদাগিরি চালায়, এবার তারা শান্তি ফেরাতে বাধ্য হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *