ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ত্রাণ সহায়তা নিতে আসা বেসামরিক নাগরিকদের হত্যাকে ‘বিপর্যয়কর’ ও ‘অমার্জনীয়’ বলে অভিহিত করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রনীতি বিয়ষক প্রধান কাজা কালাস। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) এক এক্স বার্তায় এ কথা বলেন তিনি।কাজা কালাস বলেন, তিনি ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সারের সাথে ফোনে কথা বলে ত্রাণ সহায়তা প্রবেশ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ইসরাইলি সেনাবাহিনীকে অবশ্যই ত্রাণ বিতরণ পয়েন্টে ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের হত্যা বন্ধ করতে হবে।
হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘ইসরাইল যদি তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ না করে তবে সব বিকল্প টেবিলে রয়েছে। ইসরাইলের সামরিক আগ্রাসনে গাজাবাসীর মানবেতর জীবন নিয়ে নিয়মিত কথা বলছেন ইইউর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কাজা কালাস।
গত সপ্তাহে গাজার মাঠপর্যায়ের অবস্থাকে ‘বিপর্যয়কর’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতি কার্যকর না হওয়ায় সেখানে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেয়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘মাঠের পরিস্থিতির উন্নতি করতে আমরা ইসরাইলের সঙ্গে একটি সাধারণ বোঝাপড়ায় পৌঁছেছি। কিন্তু বিষয়টি শুধু কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না, এর বাস্তব প্রয়োগ জরুরি। তবে আমরা কিছু ইতিবাচক লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি।’
বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মকর্তা আরও বলেন, গাজার মানবিক পরিস্থিতির যদি উন্নতি না হয়, তবে এর অর্থ হবে যে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো যথেষ্ট উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।

কাজা কালাস বলেন, ‘গাজার পরিস্থিতি এখন খুবই, খুবই ভয়াবহ। যতক্ষণ পর্যন্ত এর দৃশ্যমান উন্নতি না হচ্ছে, ততক্ষণ আমরা সবাই যথেষ্ট কাজ করতে পারিনি বলেই ধরে নিতে হবে।’
এদিকে অবিলম্বে গাজা যুদ্ধের অবসান চেয়েছে যুক্তরাজ্যসহ মোট ২৮টি দেশ। তারা বলছে, সেখানে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ ‘নতুন করে ভয়াবহ এক পর্যায়ে পৌঁছেছে’।
যৌথ এক বিবৃতিতে ইসরাইলের ত্রাণ সরবরাহ পদ্ধতিকে ‘বিপজ্জনক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ ত্রাণ বিতরণ এবং খাদ্য ও পানি চাইতে আসা বেসামরিক নাগরিকদের অমানবিকভাবে হত্যার’ নিন্দা জানানো হয়েছে।
গাজা এই মুহূর্তে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি। গত ২ মার্চ থেকে খাদ্য সংকট আরও তীব্র হয়েছে। কারণ ইসরাইলি বাহিনী সমস্ত সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে। খাদ্য, জ্বালানি ও চিকিৎসা সহায়তা প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। ফলে গাজার মানুষ কার্যত অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে।