সাম্প্রতিক সময়ে চিনে গিয়ে উত্তরপূর্ব ভারত নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছিল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসকে। ভারতের উত্তরপূর্ব রাজ্যগুলিকে ‘ল্যান্ডলকড’ আখ্যা দিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে বাংলাদেশকে সাগরের ‘গার্ডিয়ান’ বলে অভিহিত করেছিলেন ইউনুস। তাঁর এহেন মন্তব্য ভালো চোখে নেয়নি ভারত। আর তাই এবার বড় একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে দিল্লি।
রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তরপূর্ব ভারতের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের স্বা্থে চার লেনের হাইস্পিড একটি হাইওয়ে তৈরি করতে চলেছে ভারত। মেঘলয়ের শিলং থেকে অসমের শিলচর পর্যন্ত ১৬৬.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই হাইওয়ে উত্তরপূর্ব ভারতের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও মসৃণ করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, কলকাতা থেকে মায়ানমার হয়ে ব্যাঙ্কক পর্যন্ত একটি সড়ক নির্মাণ করছে ভারত। সেই আন্তর্জাতিক মহাসড়কের সঙ্গে গিয়ে জুড়বে শিলং-শিলচর হাইওয়েটি। এই আবহে বাংলাদেশের ওপর থেকে উত্তপূর্ব ভারতের নির্ভরশীলতা আরও কমে যাবে। ন্যাশনাল হাইওয়ে অ্যান্ড ইনফাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডের এক উচ্চপদস্থ কর্তা ফাইন্যানশিয়াল এক্সপ্রেসকে বলেন, বাংলাদেশের ‘ল্যান্ডলকড’ মন্তব্যের জবাবেই তৈরি হচ্ছে এই শিলং-শিলচর হাইওয়ে। ২০৩০ সালের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, শিলং-শিলচর হাইওয়ে তৈরির ফলে মিজোরাম, ত্রিপুরা, মণিপুর এবং বরাক উপত্যকার সঙ্গে মেঘালয়ের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে। সাড়ে ৮ ঘণ্টার যাত্রা সম্পন্ন হবে ৫ ঘণ্টাতেই। এই সড়কটি বিদেশ মন্ত্রকের কালাদান প্রকল্পের সঙ্গে জুড়বে। এই প্রকল্পেই কলকাতা বন্দর থেকে মায়ানমারের সিট্টে বন্দরটিকে সংযুক্ত করা হচ্ছে সড়ক পথে।
এদিকে শিলং-শিলচর হাইওয়ে এবং কালাদান প্রকল্পের মাধ্যমে শিলিগুড়ি করিডোর বা চিকেন নেকের ওপরেও নির্ভরশীলতা কমবে উত্তপূর্ব ভারতের। মায়ানমারের সিট্টে বন্দর ব্যবহার করেই উত্তরপূর্ব ভারত থেকে পণ্য পরিবহণ করা যাবে ভারতের বিশাখাপত্তনম, কলকাতা, পারাদীপে। এই আবহে বাংলাদেশকেই যেন চতুর্দিক দিয়ে ঘিরে ফেলবে ভারত। এমনিতেই তিনদিক দিয়ে বাংলাদেশকে ঘিরে রেখেছে ভারত। আর নয়া এই প্রকল্পে সাগরপথে ভারতের আনাগোনা আরও বেড়ে যাবে বাংলাদেশের দক্ষিণে।