পরিবেশ কর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ ত্রাণবাহী জাহাজ ‘ম্যাডলিন’ থেকে আটক ১২ জন মানবাধিকার কর্মীকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে ইসরাইল।ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যাডলিন জাহাজটি এখনো ইসরাইলের আশদাদ বন্দরের দিকে যাচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া পোস্টে ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাহাজটিকে সেলফি ইয়ট উল্লেখ করে ‘তারকাদের’ বহনকারী ‘সেলফি ইয়ট’–কে নিরাপদে ইসরাইলের উপকূলের দিকে নেয়া হচ্ছে।
পোস্টে আরও বলা হয়, ‘ইসরাইলের পৌঁছানোর পর তাদেরকে নিজ নিজ দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে।’
গ্রেটা থুনবার্গ ছাড়াও জাহাজটিতে ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত ফরাসি নাগরিক ও ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য রিমা হাসান, জার্মানির ইয়াসেমিন আচার, ফ্রান্সের ব্যাপতিস্ত আন্দ্রে, ব্রাজিলের থিয়াগো আভিলা, ফ্রান্সের ওমর ফায়াদ, পাস্কাল মৌরিয়েরাস, ইয়ানিস মোহামদি, তুরস্কের সুলাইব ওর্দু, স্পেনের সার্জিও তোরিবিও, নেদারল্যান্ডসের মার্কো ফন রেনেস ও ফ্রান্সের রিভা ভিয়া রয়েছেন।

গাজায় ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের জন্য খাবার নিয়ে এসেছিল ম্যাডলিন। জাহাজটি পরিচালনা করছে আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি)। এটিকে ভিড়তে দেয়নি ইসরাইল। ইতালি থেকে আসার সময় মিশর উপকূলে পৌঁছলে আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকেই জাহাজটিকে ইসরাইলের আশদাদ বন্দরের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।
জাহাজটি আটকের নিন্দা জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, ‘গাজার বেসামরিক নাগরিকদের জন্য খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সরবরাহের নিরাপদ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য ইসরাইলের আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে তারা প্রতিনিয়ত আন্তর্জাতিক আইনের অবমাননা করে যাচ্ছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, জাহাজটিতে থাকা ফরাসিদের অতিদ্রুত ফ্রান্সে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ করেছেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক জলসীমায় ত্রাণের জাহাজ আটকের নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক।
এদিকে ম্যাডলিন জাহজের কর্মীদের আটকের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সুইডেন। সুইডিশ নাগরিক গ্রেটা থানবার্গ এবং ইসরাইলের হেফাজতে থাকা ১১ জন মানবাধিকার কর্মীর বিষয়ে সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়া মালমার স্টেনগার্ড বলেন, সুইডেনের সরকার দীর্ঘদিন ধরে গাজায় ভ্রমণের বিরুদ্ধে পরামর্শ দিয়ে আসছে। কর্মীরা স্পষ্টত ব্যক্তিগত উদ্যোগে গাজায় ত্রাণ নিয়ে যাত্রা করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে, সেটা হলো কর্মীরা বিপদে নেই এবং কনস্যুলার সহায়তার কোনো প্রয়োজন নেই।’
এর আগে এক ভিডিও বার্তায়গ্রেটা থুনবার্গ জানান, তাদের অপহরণ করা হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব তাদের মুক্তির জন্য সুইডিশ সরকারকে চাপ দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘ইসরাইলি দখলদার সেনারা আমাদের বাধা দিয়ে আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে অপহরণ করেছে। আমি আমার সকল বন্ধু, পরিবার ও কমরেডদের আহ্বান জানাই, আমাদের মুক্তির জন্য সুইডিশ সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করুন।’
জাহাজটি ইসরাইলি বাহিনী দখলে নেয়ার প্রাক্কালে আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়ে ওই ভিডিও বার্তা দেন গ্রেটা থুনবার্গ।