ঘুমের মধ্যে দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু বাংলার ৩ শ্রমিকের

Spread the love

রুজির টানে কেরলে গিয়েছিলেন কাজ করতে। কিন্তু, আর ফেরা হল না। শুক্রবার ভোরে সেখানে একটি পুরনো বাড়ি আচমকা ধসে পড়ে। তাতে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁদের। এদিন সকালে শোকের বার্তা পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবার। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে তাঁদের দেহ আনার ব্যবস্থা শুরু হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৬টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন ওই তিন শ্রমিক সহ মোট ১৭ জন পরিযায়ী শ্রমিক। ধস নামার সময় সকলে ঘুমিয়ে ছিলেন। ওই পুরনো বাড়িটির বয়স প্রায় ৪০ বছর বলে জানা গিয়েছে। আচমকা সেটি ভেঙে পড়ায় ১৪ জন কোনওরকমে বেরিয়ে এলেও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েন তিনজন। পরে দমকল ও উদ্ধারকারী দল দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় তাঁদের উদ্ধার করে। 

মৃত তিন শ্রমিকের নাম আলিম শেখ (৩০), রবিউল ইসলাম (২১) ও রবিউল শেখ (১৯)। ইদের পর তাঁরা ত্রিশূরে দিনমজুরের কাজ করতে গিয়েছিলেন। সকলেই পশ্চিমবঙ্গের মালদার বৈষ্ণবনগরের বাসিন্দা। নির্মাণ কাজের সূত্রে সবাই একসঙ্গে ওই বাড়িতে থাকতেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ত্রিশুরের কোডাকারার ওই বাড়িটিতে মূলত বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকরাই ভাড়া থাকতেন। দমকল বিভাগ তিনটি ইউনিট নামায় উদ্ধারকাজে। একটি জেসিবিও কাজে লাগানো হয় ধ্বংসস্তূপ সরাতে। উদ্ধারকারী দলের এক আধিকারিক জানান, যাঁদের দ্রুত উদ্ধার করা গিয়েছিল, তাঁরা কাছাকাছি অবস্থানে ছিলেন। কিন্তু এক শ্রমিক ভারী কংক্রিট স্ল্যাবের নিচে চাপা পড়েছিলেন। তাঁর দেহ উদ্ধার করতে বেশি সময় লাগে। যাঁদের জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল, তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে পথে মৃত্যু হয় তাঁদেরও। 

ঘটনার পরই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ও প্রশাসন। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, বাড়িটির বয়স ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবই এই বিপর্যয়ের কারণ। এক শীর্ষ পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ভবনের ফিটনেস বা বসবাসের অনুমতি সংক্রান্ত কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাজস্ব দফতর থেকে জানানো হয়েছে, শ্রমিকদের এত সংখ্যায় ওই বাড়িতে রাখা হয়েছিল কীভাবে, সেটাও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট শ্রম দফতরকে। মৃতদেহ তিনটি ফিরিয়ে আনতে রাজ্য সরকারের তরফে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে কেরল প্রশাসনের সঙ্গে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *