ঘৃণা ‘ভোটের মতোই পণ্য’!

Spread the love

মাত্র কিছুদিন আগেই জন্মদিন গেল ঋদ্ধি সেনের। ২৭ বছরে পা রাখলেন অভিনেতা। কী লিখলেন ঋদ্ধি?

ঋদ্ধি সেন বরাবরই নিজের ভাবনা চিন্তাকে অতি স্পষ্ট করে তুলে ধরেন, কোনও রাজনৈতিক দল বা নেটিজেনদের কটাক্ষ, ভ্রুকুটিকে তিনি বিশেষ পাত্তা দেন না। তার জন্য তাঁকে হামেশাই পাকা ছেলে, বেড়ে পাকা, বুদ্ধিজীবী, ইত্যাদি সহ নানা উপমায় ভূষিত করা হয়। সমাজ মাধ্যমে কেবল ঋদ্ধি একা নন, যেই সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মনের মতো কথা বলে অন্য রকম কিছু বলেন তাঁকে ঘৃণার শিকার হতে হয়, বিদ্রূপ সইতে হয়। এদিন ২৭ বছরে পা দেওয়ার পর সেই উপলব্ধিগুলো নিয়েই একটি লেখা লেখেন ঋদ্ধি সেন।

ঋদ্ধি তাঁর পোস্টের গোড়াতেই লেখেন, ‘জন্মদিন নাকি বড় হওয়ার উদযাপন, তবে ২৭ বছরে যা বুঝলাম যে এই সমাজে খুন বা চুরি করার থেকেও বড় অপরাধ হল বড় হওয়া। বড় হওয়ার অর্থ? শারীরিক বৃদ্ধির সীমাবদ্ধতা মেনে নিয়ে মানসিক বৃদ্ধির সীমাহীনতার হাতে হাত রাখা, এই সহজ ভাবনা কবে এক গণতান্ত্রিক ট্রোলের শিকার হল জানি না, তবে আদি মানব থেকে ইমোজি হওয়ার যাত্রায় কিছু কিছু স্বভাব যে অপরিবর্তনীয় তা দিব্যি বুঝতে পারছি প্রতিদিন। জঙ্গল থেকে ফেসবুক, ‘আমি’র উন্নয়নের জন্য আমরা শুধু শিকার করতে সক্ষম, পশু হোক বা গাছ, স্বতন্ত্র ভাবনা বা সেই স্বতন্ত্র ভাবনার অধিকারী যেকোনো মন এবং শরীর।’ তিনি ভোটকে পণ্য বলেই উল্লেখ করেন নিজের লেখায়। অভিনেতার কথায়, ‘আমরা গর্বিত যে আমাদের ঘৃণা এখন ভোট বা সাবানের মতোই স্রেফ আরেকটা পণ্য। তবে ঘৃণার মুনাফায় বেড়ে ওঠা পৃথিবীর সকল ট্রোলতান্ত্রিক রাষ্ট্রের GDP’তে এখনো অবদান নেই কিছু মানুষের, সংখ্যাগরিষ্ঠের মুখোমুখি হওয়া ‘কিছু’ শব্দটা ক্ষীণ মনে হলেও দুর্বল নয়।’

তাঁকে এদিন আরও লিখতে দেখা যায়, ‘এখনও কিছু মানুষ আছে যারা 5G’র মতো দ্রুতগামী ঘৃণার পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে একটা গাছকে বড় করে তুলতে পারে, ১৮২১ সালের কোনও এক লোকগীতির সুর বয়ে বেড়াতে পারে বর্তমানে, নয় মাস ধরে শরীরের ভেতর ধারণ করতে প্রাণ, আজীবনকাল কিছু মন সহ্য করতে পারে নতুন চিন্তা জন্ম দেওয়ার প্রসব যন্ত্রণা, কিছু মানুষ এখনো শিকারের বদল একে অপরকে স্বীকার করে নিতে পারে অনায়াসে। এমন কিছু মানুষ আছে বলেই রোজ পৃথিবীতে ফিরে যাওয়ার সাহস পাই, যারা বড় হওয়াকে অপরাধ মনে করেন না, তাদের সকলকে ধন্যবাদ। জন্মদিন হল মগজের কারফিউয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর উদযাপন, এই ভাবনার পাশে এখনও যারা হেঁটে চলেছেন, তাদের সকলের জন্য রইল ভালোবাসা।’

এই ভাবনা, লেখার সঙ্গে অনেকেই মিল পেয়েছেন। তাঁর এই ভাবনার জন্য অনেকে বাহবা জানিয়েছেন তাঁকে। মানবী বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, ‘সব কারফিউজকে অপারেশন সিঁদুর করে তুলে সার্থক বড়ো হও এই আশীর্বাদ।’ আরেক ব্যক্তি লেখেন, ‘কী ভালো লিখেছেন। আপনি আর অরুণোদয় এই দুজনের লেখা পড়লে মনে হয় না কোনও অভিনেতা কলম ধরেছেন মনে হয় পরিপক্ক সাহিত্যিকের লেখা। জন্মদিনের শুভেচ্ছা নেবেন, দীর্ঘায়ু হন আর আরো দীর্ঘায়ু হোক সিনেমা, সাহিত্য ও অন্যান্য আর্ট ফর্মসে আপনার ছাপ।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *