চেনে বেঁধে রাখা হয়েছিল! মুখ খুললেন আমেরিকায় ধৃত ভারতীয় গবেষক

Spread the love

ফেডারেল হেফাজত থেকে মুক্তি পেয়েছেন জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় গবেষক বদর খান সুরি। টেক্সাসের একটি মার্কিন অভিবাসন কেন্দ্রে প্রায় দুই মাস আটক ছিলেন তিনি। উল্লেখ্য, পোস্টডক্টরাল ফেলো বদর খান সুরিকে গত মার্চ মাসে ভার্জিনিয়ায় তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। গাজার সাথে তাঁর স্ত্রীর পারিবারিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বদরের ছাত্র ভিসা বাতিল করেছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এরই সঙ্গে সামাজিকমাধ্যমে হামাসকে সমর্থন করার অভিযোগ উঠেছিল বদরের বিরুদ্ধে।

এহেন বদর মুক্তি পাওয়ার পর সুরি প্রথমবারের মতো মুখ খুললেন। অভিযোগ করলেন, আটক থাকাকালীন সময় অমানবিক আচরণ করা হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। সেই সময় নিজের অবস্থার বর্ণনা দিয়ে বদর সুরি এনবিসি নিউজ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ ছিল না, কিছুই ছিল না। তারা আমাকে একটি সাব-হিউম্যান হিসেবে রেখেছিল। প্রথম সাত-আট দিন আমি আমার ছায়াকেও মিস করেছি। আমাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিল- আমার গোড়ালি, আমার কব্জি, আমার শরীর। সবকিছুই চেনে বাঁধা ছিল। আমাকে যেখানে রাখা হয়েছিল, সেই জায়গাটা অস্বাস্থ্যকর ছিল এবং আমি তা নিয়ে ন্যায়পালের কাছে উদ্বেগ উত্থাপন করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু আমি কোনও উত্তর পাইনি।’

গ্রেফতারির জেরে তাঁর তিন ছোট সন্তানের মানসিক ক্ষতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন বদর। তিনি বলেন, ‘আমার বড় ছেলের বয়স মাত্র নয় বছর, আর আমার যমজ সন্তানের বয়স মাত্র পাঁচ। আমার নয় বছরের ছেলে জানে আমি কোথায় আছি। সে খুব খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। আমার স্ত্রী আমাকে বলতেন যে সে কাঁদত। তার মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সহায়তা প্রয়োজন। তবে আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ যে অবশেষে আমি মুক্ত হয়েছি। ন্যায়বিচার বিলম্বিত হওয়া মানে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়া।’

উল্লেখ্য, বদরের স্ত্রী গাজার বাসিন্দা ছিলেন। স্ত্রীর সঙ্গে ২০১১ সালে গাজায় দেখা হয়েছিল বদরের। ২০১৪ সালে বিয়ে করেন দু’জনে। তারপরে তিনি দিল্লিতে চলে যান। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন বদর। অবশেষে নেলসন ম্যান্ডেলা সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড কনফ্লিক্ট রেজোলিউশন থেকে সংঘাত বিশ্লেষণ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০২০ সালে পিএইচডি শেষে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান সুরি। সেখানে তিনি জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের আলওয়ালিদ সেন্টার ফর মুসলিম-ক্রিশ্চিয়ান আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ে পিস অ্যান্ড কনফ্লিক্ট স্টাডিজে পোস্ট ডক্টরাল ফেলো হিসেবে যোগ দেন। দক্ষিণ এশিয়ায় সংখ্যাগুরুবাদ ও সংখ্যালঘুদের অধিকার বিষয়ে শিক্ষকতা করছেন এবং ইরাক ও আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠা নিয়ে গবেষণা করছিলেন সুরি। সুরির বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হামাস এবং ইহুদিবিদ্বেষ প্রচারের অভিযোগ ছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *