চোখে দেখতে না পেলেও মাধ্যমিকে দুর্দান্ত ফলাফল করেছেন রামকৃষ্ণ মিশন ব্লাইন্ড অ্যাকাডেমির ছাত্ররা।জন্ম থেকেই চোখে দেখতে পান না,মাত্র ৭ ঘন্টা পড়াশোনা করেই তাঁক লাগানো রেজাল্ট করেছেন আকাশ দাস, পড়াশোনার জন্য ভর্তি করা হয় নরেন্দ্রপুরের রামকৃষ্ণ মিশনে।ছোট থেকেই সেখানকার হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা। সাথে ছিল শিষ্টাচার। অভাবের সংসার থেকে এসে নিজের প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে আকাশ মাধ্যমিকে ৬০৮ নম্বর পেয়ে রামকৃষ্ণ মিশন ব্লাইন্ড অ্যাকাডেমিতে প্রথম হয়েছে। রামকৃষ্ণ মিশন থেকেই তিনি পড়াশোনার সাথে গান করা,তবলা বাজানো,সেতার নানা ধরনের শিক্ষা গ্রহণ করেন।আকাশ দাসের ইচ্ছে পরবর্তীকালে মিউজিক নিয়ে পড়াশোনা করার।আকাশ বলেন,পড়াশোনা তিনি ৭-৮ ঘন্টা ধরে করতেন হোস্টেলে,এর থেকে বেশি পড়লেই তার মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা হয়।নানা প্রতিবন্ধকতাকে জয় করেছেন তিনি।সাথে আজকালকার যুগে যে সমস্ত ছেলে মেয়েরা মোবাইলের প্রতি বেশি আসক্ত হয়ে যাচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য আকাশ বলেন,মোবাইল যদি পড়াশোনার জন্য কাজে লাগায় তাহলে ঠিক আছে,কিন্তু পড়াশোনার বাইরে যদি অন্য কোনও বিষয়ের প্রতি ঝোঁক হয় তাহলে সেই মোবাইল ফোন ছাত্র ছাত্রীদের থেকে সরিয়ে দিতে উচিত।শিক্ষার কোনও বিকল্প হয় না।

পাশাপাশি রামকৃষ্ণ মিশনে ব্লাইন্ড অ্যাকাডেমিতে দ্বিতীয় হয়েছেন গৌরাঙ্গ প্রামাণিক, তার নম্বর ৬০০।তিনিও রামকৃষ্ণ মিশনের হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করেন।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ ব্রহ্মচারী অসীম চৈতন্য জানান,মিশনে সবাই পাশ হয়েছে।তাদের ছাত্রদের নিয়মের মধ্যে রাখা হয়।পড়াশোনার পাশাপাশি নানা ধরনের কার্যকলাপ শেখানো হয়।শারিরীক দিক থেকে যারা প্রতিবন্ধী তাদের শিক্ষার জন্য নানা ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়,সেখানে তাদের পড়াশোনা থেকে বই পত্র সমস্ত কিছুই বিতরণ করা হয়।
পাশাপাশি রামকৃষ্ণ মিশনের অন্যান্য শিক্ষকরা জানান,শারিরীক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও বড় বড় জায়গায় তাদের ছাত্ররা চাকরি করেন।উকিল থেকে শুরু করে নানা পেশার সাথে যুক্ত।ছাত্রদের হোস্টেলে রেখে হাতে ধরে পড়াশোনা, গান বাজনা শেখানো হয়।যেকোনো দু:স্থ প্রতিবন্ধী শিশুরাও রামকৃষ্ণ মিশনে বিনামূল্যে পড়াশোনা করতে পারেন।