জগন্নাথ মন্দিরে কবে থেকে ঢুকতে পারবেন?

Spread the love

দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে পূর্ণাহুতি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। আর মহাযজ্ঞের পরে মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, নিজের গোত্রে পুজো দেন না। বরং চিরকালই ‘মা-মাটি-মানুষ’ গোত্রে পুজো দিয়ে এসেছেন। কারণ সাধারণ মানুষের ভালো হলেই নিজের ভালো হবে বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী। যে সাধারণ মানুষরা বুধবারই (৩০ এপ্রিল) দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে দর্শন করতে পারবেন। প্রাথমিকভাবে মন্দিরের উদ্বোধন করা হবে। আর তারপর থেকে জগন্নাথ প্রভুর দর্শন করতে পারবেন সাধারণ মানুষ।

বুধবার জগন্নাথ মন্দিরের অনুষ্ঠানসূচি

বুধবারের অনুষ্ঠানসূচি জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগামিকাল (বুধবার) দুপুর ২ টো ৩০ মিনিট থেকে অনুষ্ঠান শুরু হবে। দুপুর তিনটেয় দ্বারোঘাটনের অনুষ্ঠান হবে। দ্বারোদ্ঘাটনের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরে জনসাধারণের জন্য (দিঘার জগন্নাথ মন্দির) খুলে দেওয়া হবে।’

সেইসঙ্গে তিনি জানান, বুধবার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হবে। রূপঙ্কর, নচিকেতা, অদিতি মুন্সি, জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, দেব, জুন মালিয়া, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়রা এসে গিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

মঙ্গলে মন্দিরের ধ্বজা ওড়ানো হয়, মহাযজ্ঞও হয়

আর আগামিকাল মেগা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে আজ দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে ধ্বজা ওড়ানো হয়। মহাযজ্ঞেও যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। পূর্ণাহুতির পরে শরবতের গ্লাস তুলে দেন পুরোহিতদের হাতে। যাঁরা দিঘায় জগন্নাথ দেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠার আচার-অনুষ্ঠান পালনের সঙ্গে যুক্ত আছেন।

‘মা-মাটি-মানুষ ভালো থাকলে আমি ভালো থাকব’, বললেন মমতা

পুরোহিতদের হাতে শরবত তুলে দেওয়ার পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজ যখন মহাযজ্ঞ হল, তখন পুরোহিতরা আমার গোত্র জিজ্ঞাসা করছিলেন। ওঁরা আমার গোত্র জানেন। আমি আমার গোত্রে পুজো করি না। আমি পুজো করি সবার জন্য – মা-মাটি-মানুষ গোত্রে। এটা আমার চিরকালের অভ্যেস। সব মা-মাটি-মানুষ ভালো থাকলে আমি ভালো থাকব। তাই সবার হয়ে অর্পণ করা হল।’

‘মুখে প্রচার করে ধর্ম পালন করা যায় না’, খোঁচা মমতার

সেইসঙ্গে নাম না করে বিজেপিকেও খোঁচা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে সব ধর্ম, সব বর্ণের মানুষরা এসেছেন। তাঁরা সকলেই অতিথি। আর মুখে প্রচার করে ধর্ম পালন করা যায় না। ধর্ম হল একটা জিনিস, যা মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যায় বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

তারইমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘একদিকে দেবতার আরাধনা, অন্যদিকে মানুষের মিলনক্ষেত্র রূপে সেজে উঠেছে দিঘার সমুদ্রসৈকত। বাংলার গর্ব, সংস্কৃতি আর সম্প্রীতির মিলনস্থল হয়ে উঠছে নবনির্মিত দিঘার জগন্নাথধাম। তাঁর পাদস্পর্শে সমৃদ্ধ হবে এই পুণ্যভূমি। ভক্তি, শ্রদ্ধা, গৌরব আর বিশ্বাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হচ্ছে সমুদ্র শহর দিঘার মাটিতে। প্রভু জগন্নাথদেবের আগমন ঘিরে রীতি মেনে চলছে হোম-যজ্ঞ, পূজা, শঙ্খধ্বনি। কলিঙ্গ শৈলীর সূক্ষ্ম ছোঁয়ায় গড়ে ওঠা দিঘার জগন্নাথদেবের মন্দির কেবল স্থাপত্যই নয়; এটি আমাদের ভক্তি, শ্রদ্ধা আর আবেগের মূর্ত প্রতীক।’

সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আজ দিঘার নবনির্মিত প্রভু জগন্নাথদেবের মন্দির সরেজমিনে পরিদর্শন করলাম এবং আনুষ্ঠানিকভাবে মন্দির উদ্বোধনের প্রাক্কালে সমস্ত বিষয় পর্যবেক্ষণ করলাম। আগামিকাল মহাযজ্ঞ এবং অক্ষয় তৃতীয়ার পুণ্যলগ্নে নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন। আধ্যাত্মিকতার আলোয় এবং সমুদ্রের সৌন্দর্যে বাংলার পুণ্যভূমি আন্তর্জাতিক পর্যটনক্ষেত্র রূপে ধরা দেবে বিশ্ববাসীর মনে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস বাংলার কৃষ্টি, সৃষ্টি, সংস্কৃতি ও সম্প্রীতির মেলবন্ধনে চির আবদ্ধ থাকব আমরা।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *