কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে গত ২২ এপ্রিলের অভিশপ্ত দুপুরে নিরীহ ২৬ জনের ওপর জঙ্গি হামলার ক্ষত আজও দগদগে ভারতের বুকে। সেই হামলার ক্ষত বুকে নিয়ে পাকিস্তানকে জবাব দিতে ভারত নেমেছে ‘অপারেশন সিঁদুর’এ। এরই মাঝে ‘দ্য প্রিন্ট’র রিপোর্ট দাবি করছে, পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলার আগে জায়গার স্যাটেলাইট ছবির চাহিদা বেড়ে গিয়েছিল।
রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে মার্কিন সংস্থা ‘ম্যাক্সার টেকনোলজিসের’ কথা। এই মার্কিন সংস্থার দাবি, তাদের কাছে গত ২ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অভাবনীয়ভাবে বেড়ে যায় পহেলগাঁওয়ের স্যাটেলাইট ছবির চাহিদা। এই সময়কালে তাদের কাছে ১২ টি এমন ছবির অর্ডার চাওয়া হয়েছিল বলে খবর। চাহিদা ছিল হাইরেজোলিউশন ছবির জন্য।
শুধু পহেলগাঁওই নয়। তার আশপাশের এলাকার স্যাটেলাইট ছবির চাহিদাও সংস্থার কাছে অভূতপূর্বভাবে বেড়ে যায়। সাধারণত ওই এলাকা নিয়ে স্যাটেলাইট ছবির যা চাহিদা থাকে, তার থেকে বেশি ছিল এই সময়ের মধ্যে ওই এলাকার স্যাটেলাইট চাহিদা। যারা এই ছবি চেয়েছে স্বভাবতই স্বভাবতই সেই ব্যক্তি বা সংস্থাগুলি ঘিরে সন্দেহ বাড়তে শুরু করে দিয়েছে।প্রসঙ্গত, এই মার্কিন সংস্থা, ম্যাক্সারের গ্রাহক বিশ্বের নানান দেশের সরকার। এছাড়াও বিভিন্ন দেশের প্রতিরক্ষা এজেন্সিগুলিও এই সংস্থার গ্রাহক। কোন দেশ থেকে পহেলগাঁওয়ের এই স্যাটেলাইট ছবির চাহিদা বেশি ছিল? প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে এই রিপোর্ট ঘিরে। তথ্য আরও বলছে, পহেলগাঁওয়ের স্যাটেলাইট ছবির চাহিদা ২০২৪ সাল থেকে বেড়েছে। ঠিক তার আগে, পাকিস্তানে অবস্থিত এক জিও স্প্যাটিয়াল সংস্থার সঙ্গে ম্যাক্সারের সংযোগ হয়। পাকিস্তানের ওই সংস্থা আমেরিকায় একাধিক অপরাধে যুক্ত বলে দাবি ‘দ্য প্রিন্টের’।
পাকিস্তানি-আমেরিকান ব্যবসায়ীকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাকিস্তান পরমাণু শক্তি কমিশনে অবৈধভাবে উচ্চ-কার্যক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটার সরঞ্জাম এবং সফ্টওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন সলিউশন রপ্তানি করার জন্য মার্কিন ফেডারেল আদালত দোষী সাব্যস্ত করে এবং এক বছরের কারাদণ্ড দেয়। এদিকে, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে, পহেলগাঁওয়ের জন্য বিভিন্ন স্যাটেলাইট ফ্রিকোয়েন্সি রেঞ্জের অর্ডার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল, ১২, ১৫, ১৮, ২১ এবং ২২ তারিখে কেনাকাটা করা হয়েছিল।শুধু হামলার আগে নয়। হামলার পরও এই স্যাটেলাইট ছবির চাহিদা ছিল। প্রতিটি স্যাটেলাইট ছবির প্রাথমিক মূল্য ৩ লক্ষ টাকা, যা উচ্চ রেজোলিউশনের সাথে বৃদ্ধি পায়। ম্যাক্সার টেকনোলজিস তার স্যাটেলাইটগুলির জন্য বিখ্যাত যা ১৫ সেমি থেকে ৩০ সেমি পর্যন্ত পিক্সেল রেজোলিউশনের হাই-ডেফিনেশন ছবি সরবরাহ করে। ছোট পিক্সেল আকারের দ্বারা আরও স্পষ্ট ছবি পাওয়া যায়।
প্রসঙ্গত ভারতে ইসরো, এই মার্কিন সংস্থা ম্যাক্সারের গ্রাহক। এছাড়াও ভারতের ১১ টি স্পেস টেক স্টার্ট আপ, সংস্থা এই মার্কিন সংস্থার গ্রাহক। এই সমস্ত তথ্যের প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠছে পহেলগাঁও নিয়ে স্য়াটেলাইট ছবির চাহিদা বেড়েছিল কাদের তরফে?