জম্মু ও কাশ্মীরের ৪৮টি পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ সরকারের

Spread the love

পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হানার পরেই ৮৭টি পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে ৪৮টিই বন্ধ করে দিল জম্মু ও কাশ্মীর সরকার। মোতায়েন করা হয়েছে অ্যান্টি ফিদায়েন স্কোয়াড। উপত্যকায় ২৬ জন নিরীহ মানুষের উপর নির্বিচারে গুলি চালনার ঘটনায় বড় পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন। বেশ কয়েকটি রিসর্টও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, দুধপথরি (বুডগাম) ও ভেরিনাগ (অনন্তনাগ)-সহ বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা পর্যটকদের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

গোয়েন্দা সূত্রে খবর, পহেলগাঁওয়ে হামলার পরেই উপত্যকায় কিছু স্লিপার সেল সক্রিয় হয়ে উঠেছে এবং তাদের ‘অপারেশন’-এ নামার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, সক্রিয় জঙ্গিদের বাড়ি ভেঙে ফেলার পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে পরিকল্পনা করা হচ্ছে আরও বড় হামলা এবং লক্ষ্য স্থির করে হত্যার। গোয়েন্দা সূত্র আরও জানিয়েছে, আইএসআইয়ের ছক অনুযায়ী পাক জঙ্গিরা স্থানীয় জঙ্গিদের সাহায্য নিয়ে নিরাপত্তা রক্ষী, অ-কাশ্মীরি, পুলিশ ও কাশ্মীরি পণ্ডিতদের টার্গেট করতে পারে।এই পরিস্থিতিতে প্রশাসন কোনও রকম ঝুঁকি নিতে নারাজ। পহেলগাঁওয়ের মতো ঘটনার যাতে জঙ্গিরা না চালাতে পারে, সেজন্য অধিকাংশ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পর্যটনকেন্দ্র আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গোয়েন্দা রিপোর্টে আরও জানা গিয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরের রেলওয়ে পরিকাঠামোতেও হামলা চালিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা নষ্ট করার ছক কষেছে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। এই মুহূর্তে রেলওয়ে নির্মাণকাজের জন্য কয়েক শো অ-কাশ্মীরি সেখানে রয়েছেন। ভারতের তরফেও জঙ্গি হামলা ঠেকাতে একটি ফিদায়েঁ-রোধী বাহিনী গড়া হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ থেকে প্রাথমিকভাবে লোক নিয়োগ করে গুলমার্গ, সোনমার্গ ও ডাল লেকের কাছে তাদের মোতায়েন করা হয়েছে।

গত ২২ এপ্রিল সবুজে ঘেরে পাহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকা রক্তাক্ত হয় জঙ্গিদের গুলিতে। নেপথ্যে পাকিস্তান মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয় ২৬ জন নিরপরাধ মানুষের। এই ঘটনার পর থেকেই উপত্যকায় আতঙ্ক ছড়ায়, শুরু হয় পর্যটকদের সরানোর কাজ। তবে ধীরে ধীরে ফের পর্যটকেরা ফিরছিলেন কাশ্মীরে, ঠিক সেই সময়েই আবার হামলার আশঙ্কা।যার জেরে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।রাজ্যবাসী ও পর্যটকদের উদ্দেশে প্রশাসনের বার্তা, নিরাপত্তা সংক্রান্ত নির্দেশিকা মেনে চলা বাধ্যতামূলক। উপত্যকার পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার উভয়েই।

পাহেলগাঁও হামলার জবাবে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থাগুলি সন্ত্রাসবাদী বাস্তুতন্ত্র দমনের অংশ হিসাবে জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগর, ডোডা এবং কিশতওয়ারের কয়েক ডজন জায়গায় অভিযান চালিয়েছে। ভাঙচুর করা হয় সন্দেহভাজন জঙ্গিদের বেশ কয়েকটি বাড়ি। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের এক মুখপাত্র বলেন, ‘জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং স্বাধীন সাক্ষীদের উপস্থিতিতে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া মেনেই তল্লাশি চালানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *