জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও করণীয়!

Spread the love

প্রাণীর কামড় থেকে মানুষ আক্রান্ত হন জলাতঙ্ক রোগে। এ রোগে আক্রান্ত হলে মানুষ সাধারণত জলের ভীতির মধ্যে জীবন পার করেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাদের দেশে ৯৫ শতাংশ রোগী জলাতঙ্কে আক্রান্ত হন কুকুরের কামড় থেকে। তবে কুকুরের পাশাপাশি শিয়াল, বিড়াল, বাদুড়, বেজি, বানর ইত্যাদি প্রাণীর কামড়েও জলাতঙ্কে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

এ ভাইরাসে আক্রান্ত প্রাণী বা মানুষ সুস্থ কাউকে কামড়ালে ওই সুস্থ ব্যক্তিও জলাতঙ্কে আক্রান্ত হন। এ রোগে আক্রান্ত হলে ফুসফুস, স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, প্রাণীর কামড় খাওয়ার ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে রোগীর মধ্যে জলাতঙ্ক রোগের উপসর্গ স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

চিকিৎসা শাস্ত্রে জল দেখে বা জলের কথা মনে পড়লে যে আতঙ্ক তৈরি হয় তাকে বলা হচ্ছে হাইড্রোফোবিয়া বা পানি আতঙ্ক। র‌্যাবিস ভাইরাসঘটিত এ রোগে আক্রান্ত হলে রোগীর মধ্যে বেশকিছু উপসর্গ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। জলাতঙ্কের উপসর্গের মধ্যে রয়েছে-

১। কর্কশ কণ্ঠস্বর

২। খিটখিটে মেজাজ

৩। অন্যকে অকারণে কামড় বা আক্রমণের প্রবণতা

৪। খাবারে অরুচি

৫। অস্বাভাবিক কথাবার্তা

৬। উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়ানো

৭। জল পিপাসা পেলেও জল দেখে আতঙ্কিত হওয়া

৮। আলো বাতাসের সংস্পর্শে এলে ভয় বেড়ে যাওয়া

৯। মানুষের চোখের আড়ালে, অন্ধকারে, একা থাকতে পছন্দ করেন।

১০। খিঁচুনি ও মুখে লালা বের হওয়া ইত্যাদি।

টিকা

এ রোগ থেকে বাঁচতে অবশ্যই টিকা নিতে হবে। চিকিৎসকরা বলছেন, এ ধরনের রোগীরা লক্ষণ দেখার এক সপ্তাহের মধ্যে মারা যান। তবে রোগের লক্ষণ প্রকাশের আগে শরীরে টিকা প্রয়োগ করতে পারলে মৃত্যু এড়ানো যায়।

করণীয়

প্রাণী আঁচড় বা কামড় থেকে সতর্ক থাকুন। তারপরও প্রাণীর হামলার শিকার হলে  এ বিষয়ে ঢাকার মহাখালীর ইনফেকশন ডিজেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার বিকাশ কুমার সরকার বলছেন, আক্রান্ত স্থান রক্তপাত বন্ধে চেপে ধরুন। ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু ধ্বংসে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান ( কাপড় ধোয়ার সাবান) দিয়ে আক্রনান্ত স্থান ১৫ মিনিট ধরে ধুয়ে নিন। 

দ্রুত হাসপাতাল বা ফার্মেসিতে যান। ক্ষতস্থান প্রথমে পটাশিয়াম পারম্যাংগানেট পরে ক্লোরহেক্সিডিন বা পোভিডোন আয়োডিন দিয়ে ধুয়ে দিন। অ্যান্টিবায়োটিক মলমের প্রলেপ দিয়ে ব্যান্ডেজ করুন।

নিয়মিত এভাবে ক্ষতস্থান পরিষ্কার করুন। মনে রাখবেন, ক্ষতস্থানে কখনও স্যালাইন, বরফ, চিনি, লবণ, ইলেকট্রিক শক ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না। ক্ষতস্থানে সেলাই করাও উচিত নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *