‘উনি তো খুন করেননি।’ জালিয়াতি মামলায় প্রাক্তন ট্রেনি আইএএস পূজা খেদকারকে শর্তসাপেক্ষে আগাম জামিন মঞ্জুর করেছে সুপ্রিম কোর্ট।এরপর তদন্তের স্বার্থে যদি পূজাকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ, সেক্ষেত্রে ৩৫,০০০ টাকা প্রদানের শর্তে জামিনে মুক্তি পাবেন তিনি।এর আগে ২০২৪ সালের নভেম্বরে পূজার আগাম জামিন নাকচ করে দিয়েছিল দিল্লি হাইকোর্ট।
বুধবার শীর্ষ আদালতে বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি সতীশ চন্দ্রের বেঞ্চ পূজাকে আাগাম জামিন দিয়েছে। এদিন আগাম জামিনের আবেদন গ্রহণ করলেও পূজাকে তদন্তে সহযোগিতার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। প্রাক্তন আইএএস শিক্ষানবিশের বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ করেছিল দিল্লি পুলিশ।
এদিন সুপ্রিম কোর্টে দিল্লি পুলিশের পক্ষে উপস্থিত অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু পূজার জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের বিষয়ে বিস্তারিত তদন্তের জন্য পূজাকে হেফাজতে রাখা প্রয়োজন।’ তাঁর যুক্তি ছিল, এই জালিয়াতিতে পূজা ছাড়াও আরও অনেকের জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সে কারণেই তদন্তের স্বার্থে পূজাকে হেফাজতে রাখা প্রয়োজন।
এরপরেই বিচারপতি নাগরত্ন প্রশ্ন করেন, ‘সহযোগিতা করছেন না, এই কথার মানে কী? তিনি তো কোনও খুন করেননি! এটি কোনও মাদক সংক্রান্ত অপরাধও নয়! তিনি অবশ্যই তদন্তে সহযোগিতা করবেন।’ একইসঙ্গে আদালতের পর্যবেক্ষণ, জাল সার্টিফিকেটের তদন্তের জন্য তাঁকে হেফাজতে রাখার প্রয়োজন নেই। এই মর্মেই বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং সতীশ চন্দ্র শর্মার বেঞ্চে জামিন পান পূজা। এছাড়াও, ২০২৪ সালের নভেম্বরে পূজার আগাম জামিন বাতিল করা নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টকে ভর্ৎসনা করেছে দুই বিচারপতির বেঞ্চ।

২০২২ সালের ব্যাচের শিক্ষানবিশ আমলা পূজা মহারাষ্ট্রের পুণেতে অ্যাসিসট্যান্ট কালেক্টর হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। গত বছর তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে ইউপিএসসি পরীক্ষায় পাশ করতেও বহু নিয়ম বহির্ভূত কাজ করেছেন তিনি। নির্ধারিত সীমার বেশিবার পরীক্ষা দিতে নাম, পরিচয় ও বয়স ভাঁড়ানোর অভিযোগ উঠেছিল পূজার বিরুদ্ধে। নিয়ম অনুযায়ী ইউপিএসসিতে জেনারেল ক্যাটাগরির প্রার্থী ৩২ বছর বয়সের মধ্যে ৬ বার পরীক্ষা দিতে পারেন। আবার ওবিসি প্রার্থীরা ৩৫ বছরের মধ্যে ৯ বার পরীক্ষায় বসতে পারেন।
সূত্রের খবর, পূজা মোট ১১ বার ইউপিএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, বিশেষভাবে সক্ষম কোটার জন্য ভুয়ো সার্টিফিকেট দাখিল করেছিলেন বলেও অভিযোগ ওঠে। একের পর এক অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্তের পর তাঁকে চাকরি থেকে বহিষ্কার করে ইউপিএসসি কমিটি। অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে দিল্লি পুলিশ।এরপরেই গ্রেফতারি থেকে বাঁচতে দিল্লি হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানান পূজা। কিন্তু তা নাকচ করে দেয় হাইকোর্ট।