বাবা ও কাকার বিরুদ্ধে সাক্ষ্যদান ছেলের? ট্যাংরায় একই পরিবারের তিন সদস্যকে খুন করে আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন দুই ভাই প্রণয় দে ও প্রসূন দে। এবার দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধেই চার্জশিট দেওয়ার প্রস্তুতি পুলিশের। সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহেই প্রণয় ও প্রসূনের বিরুদ্ধে পুলিশ শিয়ালদহ আদালতে চার্জশিট পেশ করতে পারে।
ট্যাংরার অভিজাত দে পরিবারের বড় ছেলে প্রণয় দে-র নাবালক ছেলে আহত অবস্থায় এনআরএস হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীনই তার বয়ান নেন পুলিশ আধিকারিকরা। সেটিই সাক্ষীর বয়ান হিসাবে চার্জশিটে যুক্ত করতে চায় পুলিশ। সেই ক্ষেত্রে বাবা প্রণয় দে ও কাকা প্রসূন দে-র বিরুদ্ধে সাক্ষী হতে পারে পরিবারের ওই নাবালক ছেলেটিই। এ ছাড়াও দে পরিবারের চামড়ার কারখানার সঙ্গে যুক্ত একাধিক ব্যক্তি ও কয়েকজন আত্মীয়পরিজন এই মামলার সাক্ষী হচ্ছেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে বাইপাসের উপর মেট্রোরেলের পিলারে গাড়ির ধাক্কা দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে প্রণয় ও প্রসূন। তখন ওই গাড়িতে ছিল দে পরিবারের নাবালক ছেলে প্রতীপ। এর পরই ট্যাংরায় তাদের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বড় ছেলের স্ত্রী সুদেষ্ণা দে, ছোট ছেলের স্ত্রী রোমি ও প্রসূন-রোমির মেয়ে প্রিয়ংবদার দেহ। তদন্তে উঠে আসে যে, বিদেশে চামড়ার ‘শিল্প-গ্লাভস’ রফতানির ব্যবসায় চূড়ান্ত মন্দা ও ক্ষতির কারণে ‘পিঠ ঠেকে’ যায় প্রণয় ও প্রসূনের। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, মূলত দুই ভাইয়ের বক্তব্যে অসঙ্গতি কাটাতেই পুলিশ এনআরএস হাসপাতালে ওই নাবালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

নাবালক পুলিশকে জানায়, সে নিজে তার মা, কাকিমা ও দিদিকে খুন হতে দেখেনি। কিন্তু তাঁদের ঘরের ভিতর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছে। তার কাকা দিদি প্রিয়ংবদার মতো তাকেও শ্বাসরোধ করে খুন করার চেষ্টা করে। কিন্তু যোগব্যায়ামে পারদর্শী নাবালক শ্বাস ধরে রাখার ফলে কোনওমতো বেঁচে যায়। এর পর কাকা তার হাতের শিরা কেটেও তাকে খুনের চেষ্টা করে। তার বাবা বাধা দেয়। পুলিশের মতে, ওই নাবালককে জিজ্ঞাসা করে বহু অসঙ্গতি কেটেছে। খুনের ক্ষেত্রে তার বাবা ও কাকার ষড়যন্ত্রের তথ্যও সামনে এসেছে। তাই এই খুনের মামলার ক্ষেত্রে নাবালকের বক্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই চার্জশিটে সাক্ষীর বক্তব্য হিসাবেই পুলিশ তার বয়ান আদালতে পেশ করতে পারে।