ঠাকুরপুকুর কাণ্ডে ভিক্টোর বিরুদ্ধে দায়ের মামলা

Spread the love

গত ৬ এপ্রিল ঠাকুরপুকুরে আচমকাই গাড়ি নিয়ে ব্যস্ত পথে ঢুকে পড়েন সিদ্ধান্ত দাস ওরফে ভিক্টো(Victo)। ঘটনায় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়, আহত হন আরও বেশ কয়েকজন। ওই ঘটনার জেরে পরিচালকের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু হয়েছিল। কিন্তু এবার নতুন মামলা দায়ের করা হল পরিচালকের বিরুদ্ধে।

গত ১৬ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানিতে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত পরিচালককে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল আলিপুর আদালত। কিন্তু এর মধ্যেই মৃত পথচারীর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসায় সবকিছুই পাল্টে যায়। রিপোর্ট হাতে পেয়েই পরিচালকের বিরুদ্ধে সরাসরি খুনের মামলা দায়ের করা হয়।

ঠাকুরপুকুর কাণ্ডে লালবাজার গোয়েন্দাদের হাতে যে তথ্য উঠে এসেছে তা থেকে জানা গেছে, গত ৫ এপ্রিল গভীর রাত থেকে পরদিন সকালবেলা পর্যন্ত নেশায় ডুবেছিলেন পরিচালক। এতটাই মদ্যপান করেছিলেন যে, সকাল এবং রাতের মধ্যে কোনও তফাৎ বুঝতে পারেননি তিনি। মদ্যপ ব্যবস্থায় থাকার জন্য বাজারের রাস্তাকে রাতের ফাঁকা রাস্তা বলে ভুল করেন পরিচালক।

তদন্তে আরও উঠে এসেছে, প্রায়শই ঠাকুরপুকুরের ওই রাস্তা দিয়ে রাত তিনটে বা ভোর চারটে নাগাদ গাড়ি চালিয়ে যাওয়া আসা করতেন পরিচালক। খুব স্বাভাবিকভাবেই সেই সময় সম্পূর্ণ রাস্তা ফাঁকা থাকত, তাই শর্টকাট নেওয়ার জন্য ওই বাজারে রাস্তায় বেছে নিতেন তিনি। সেদিনও তাই করেছিলেন। দিনকে রাত ভেবে ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালিয়েছিলেন তিনি।

দিনকে ভুল করে রাত ভাবা, এটা মদ্যপ অবস্থায় হতেই পারে কিন্তু পরিচালক যদি জেনেই থাকতেন তিনি অতিরিক্ত মদ খেয়ে রয়েছেন তাহলে কেন গাড়ি চালাতে গেলেন তিনি। শুধু তাই নয়, একজন ব্যক্তিকে গাড়ি দিয়ে আঘাত করার পর যখন উপস্থিত সকলে চিৎকার করে ওঠেন তখনও কেন তিনি বুঝতে পারেননি যে তিনি কিছু ভুল করে ফেলেছেন? প্রথমেই যদি গাড়ি থামিয়ে দেওয়া যেত তাহলে হয়তো এত বড় বিপদ হতো না।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গাড়ি নিয়ে হঠাৎ বাজারে ঢুকে পড়ে প্রথম একটি স্কুটিকে সজোরে ধাক্কা মারে পরিচালকের গাড়ি। এরপরেই একের পর এক পথচারী এবং অস্থায়ী দোকানগুলিকে ধাক্কা মারতে মারতে ১২০ মিটার এগিয়ে যান ভিক্টো। এরপরই একটি দোকানে দাঁড়িয়ে থাকা এক বয়স্ক ব্যক্তিকে হঠাৎ ধাক্কা মেরে প্রায় ৩০ মিটার টেনে নিয়ে যান তিনি।

শুধু প্রত্যক্ষদর্শীরা নয়, প্রত্যেকটি দোকানে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরায় ফুটে উঠেছে ওই একই ঘটনার ফুটেজ। এখানেই উঠেছে প্রশ্ন। একের পর এক দোকানে ধাক্কা মারার পরেও কি পরিচালক বুঝতে পারেননি,গাড়ি থামানো উচিত? সবটাই কি অনিচ্ছাকৃত নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে গাড়ি জোরে চালিয়েছিলেন তিনি? সমস্ত প্রমাণ পরিচালকের বিরুদ্ধে চলে যাওয়ায় তাই অবশেষে খুনের মামলা রুজু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *