ঠাকুরবাড়ির রাজনীতিতে ফের নতুন অধ্যায়। ‘অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘ’ নামে আগে থেকেই দুটি সংগঠন সক্রিয় ছিল। এবার সেই একই নামে আরও একটি নতুন সংগঠন গঠনের কথা ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের দাদা ও বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর। তাঁর এই ঘোষণা কার্যত ঠাকুরবাড়ির অভ্যন্তরীণ বিভাজনকে আরও গভীর করল। জানা গিয়েছে, আগামী সপ্তাহেই নতুন এই সংগঠনের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ হতে চলেছে।
রবিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুব্রত ঠাকুর বলেন, একই নামে আরও একটি মতুয়া মহাসংঘ তৈরি হচ্ছে। আগামী ৪ নভেম্বর বিস্তারিতভাবে জানানো হবে। যদিও কেন আলাদা সংগঠনের প্রয়োজন হল, সে বিষয়ে তিনি এখনই কিছু স্পষ্ট করে বলেননি। তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, ঠাকুরবাড়ির দুই ভাই শান্তনু ও সুব্রতের মধ্যে টানাপোড়েন এর মধ্য দিয়েই আবারও প্রকাশ্যে এল।
উল্লেখ্য, শান্তনু ঠাকুর বর্তমানে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী এবং একটি ‘অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘ’-এর সংঘাধিপতি। অপরদিকে, সুব্রত ঠাকুর অন্য একটি মহাসংঘের মহাসঙ্ঘাধিপতির পদে রয়েছেন। সংগঠনের দিক থেকে তিনি দায়িত্বে থাকলেও, বাস্তবে অধিকাংশ সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন শান্তনুই এমন অভিযোগ সুব্রতের ঘনিষ্ঠদের। এই ক্ষমতার দ্বন্দ্বই ধীরে ধীরে ঠাকুরবাড়ির পারিবারিক ও রাজনৈতিক সম্পর্কে তীব্র বিভাজন তৈরি করেছে। দিন কয়েক আগেই সিএএ শিবির নিয়ে ঠাকুরবাড়িতে দুই ভাইয়ের প্রকাশ্য বিরোধ দেখা দেয়। শান্তনু যেখানে কেন্দ্রের নাগরিকত্ব আইন কার্যকরে সক্রিয়, সেখানে সুব্রত অভিযোগ করেন, মতুয়াদের নাম ভাঙিয়ে ব্যক্তিস্বার্থে রাজনীতি করা হচ্ছে। সেই ঘটনার পর থেকেই ঠাকুরবাড়িতে একেবারে স্পষ্ট হয়ে ওঠে দুই গোষ্ঠীর দূরত্ব। সেই সময়ে ঠাকুরবাড়ির অপর পক্ষের প্রতিনিধি তথা তৃণমূল রাজ্যসভার সাংসদ মমতা ঠাকুর প্রকাশ্যে সুব্রতের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। যদিও সুব্রত ও শান্তনু দু’জনেই বিজেপির সঙ্গে যুক্ত, কিন্তু দলীয় কর্মসূচিতে তাঁদের একসঙ্গে দেখা যায় না। ফলে সুব্রতের নতুন সংগঠন ঘোষণা বিজেপির অন্দরে অস্বস্তি তৈরি করেছে।
