ডুয়ার্সের কলাবাড়ি চা বাগানে ফের চিতাবাঘের হামলায় প্রাণ গেল এক খুদের। শিশুটি শুক্রবার সন্ধেয় খেলা করছিল বাড়ির উঠোনে। পরিবারের সদস্যরা অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলেন। ঠিক সেই সময়ই ঘটে যায় মর্মান্তিক ঘটনা। হঠাৎ করেই বাড়ির সামনের উঠোন থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় শিশুটি। স্থানীয়দের দাবি, ওঁৎ পেতে থাকা একটি চিতাবাঘ আচমকাই ঝাঁপিয়ে পড়ে শিশুটির উপর। মুখে করে তাকে তুলে নিয়ে চলে যায় বাগানের গভীরে। ঘটনার পরই এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে চাঞ্চল্য। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে কলাবাড়ি চা বাগানে। ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে বনবিভাগের ভূমিকা নিয়ে।
চিতা বাঘ শিশুকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পরেই শুরু হয় খোঁজ। কিছুক্ষণ পরেই চা বাগানের ১৮ নম্বর সেকশন থেকে উদ্ধার হয় শিশুটির নিথর দেহ। সারা শরীরে দেখা যায় গভীর ক্ষতের চিহ্ন। মৃত শিশুর নাম আয়ূষ ওঁরাও, বয়স মাত্র তিন বছর। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, তারা দেখেছেন, কীভাবে চিতাবাঘটি শিশুটিকে নিয়ে পালায়। ঘটনার খবর ছড়াতেই বন দফতরের কর্মীরা পৌঁছন ঘটনাস্থলে। কিন্তু তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। তাঁদের ক্ষোভ, বারে বারে সতর্ক করা সত্ত্বেও বন দফতর চা বাগান সংলগ্ন বসতিপাড়াগুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোনও পদক্ষেপ করছে না।।পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মৃতদেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তে।

উল্লেখযোগ্য বিষয়, এই কলাবাড়ি এলাকা থেকেই গত দু’মাসে বন দফতর তিনটি চিতাবাঘকে ধরে খাঁচাবন্দি করেছে। তবু হানা বন্ধ হয়নি। এখনও কয়েকটি জায়গায় ফাঁদ পাতা রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ২০১৯ এবং ২০২৪ সালেও একইভাবে চিতাবাঘ শিশুদের তুলে নিয়ে গিয়েছিল। প্রতি বছরই এমন ঘটনা ঘটে চলেছে, অথচ প্রশাসনের তরফে নেই কোনও দীর্ঘমেয়াদি সমাধান। চিতাবাঘের হামলার আতঙ্কে ইতিমধ্যেই অনেক চা বাগানে বন্ধ হয়েছে কাজ। দিন যত গড়াচ্ছে, ততই বাড়ছে আতঙ্ক আর ক্ষোভ।