‘তীব্র মানসিক চাপে’ বেনস্ট্রোক হয়ে মৃত্যু শিক্ষকের!দোষ কি মমতার?

Spread the love

ব্রেন স্ট্রোকে মৃত্যু হল এক চাকরিহারা শিক্ষকের। ওই শিক্ষকের নাম প্রবীণ কর্মকার। আজ বৃহস্পতিবার তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় আন্দোলনকারীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। একইসঙ্গে শোকের ছায়া নেমেছে। এর জন্য রাজ্য সরকারকেই দায়ী করেছেন আন্দোলনকারীরা।

জানা গিয়েছে, প্রবীণ কর্মকার মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের হরিদাস নগরের বাসিন্দা। ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তিনি চাকরি পেয়েছিলেন। তিনি অমুইপাড়া উদ্বাস্তু বিদ্যাপীঠের শিক্ষক ছিলেন। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি চলে যায়। সেই তালিকায় প্রবীণও ছিলেন। তারপর থেকেই চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবিতে লাগাতার আন্দোলনে করে আসছেন চাকরিহারা শিক্ষকরা।

তারইমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন ৩০ মে’র মধ্যে এসএসসিতে নিয়োগের পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। এসব নিয়ে চাকরিহারাদের আন্দোলন আরও তীব্র হয়। যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও কেন পরীক্ষায় বসতে হবে, তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলে আন্দোলন তীব্রতর করেন চাকরিহারা শিক্ষকরা। এসবের মধ্যেই চাকরি নিয়ে মানসিক চাপ এবং হতাশার মধ্যে ছিলেন প্রবীণ। বুধবার তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। বৃহস্পতিবার তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

প্রবীণের মৃত্যুর পরেই চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে নতুন করে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এ বিষয়ে রাজ্য সরকারকে দায়ী করে চাকরিহারা আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, সরকার সহানুভূতি না দেখানোর ফলেই এমনটা হয়েছে। সরকার সহানুভূতিশীল নাহলে আগামিদিনে বাংলা চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের লাশের স্তূপে পরিণত হবে।

তাঁদের বক্তব্য, এটা শুধুমাত্র একজনের মৃত্যু নয়, সরকারের সহানুভূতির অভাবে শিক্ষিত, অভিজ্ঞ মানুষরা কীভাবে ভেঙে পড়ছেন! তারই প্রতিচ্ছবি। প্রসঙ্গত, আজ সকালেও পরীক্ষায় যাতে না বসতে হয় .সেজন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আর্জি জানাতে গিয়েছিলেন ৬ শিক্ষিকার একটি প্রতিনিধি দল। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছে পৌঁছাতেই কালীঘাট থানার পুলিশ তাঁদের আটক করে নিয়ে যায়।

সেই ঘটনা নিয়ে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেছেন, ‘মুর্শিদাবাদের যোগ্য শিক্ষক প্রবীণ কর্মকারের মৃত্যুর সম্পূর্ণ দায় রাজ্য সরকারকে নিতে হবে। আমরা দাবি করছি, দুর্নীতির প্রমাণ ছাড়া প্রত্যেক শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীকে তাঁর নিজ কাজে পুনর্বহালের জন্য যা যা করণীয়, তা রাজ্য সরকারকে করতে হবে। নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে প্রবীণ কর্মকারের পরিবারকে ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং পরিবারের একজনকে চাকরি দিতে হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *