তেহরানে ইজরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৬ জন ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানী। সূত্র উদ্ধৃত করে রোয়া নিউজের রিপোর্টে এই দাবি করা হয়েছে। এদিকে তেহরানে ইজরায়েলের হামলায় মৃত্যু হল বিপ্লবী গার্ডের প্রধান হোসেন সলামির। সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছেন ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মহম্মদ বাঘেরি।
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’-এর অংশ হিসেবে শুক্রবার ইজরায়েলি বিমান বাহিনী ইরানের ওপর হামলা চালায়। ইজরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ সাইট, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র এবং সামরিক নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছিল। ইরানি গণমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীরা দেশটির প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র নাতাঞ্জসহ বেশ কয়েকটি স্থানে বিস্ফোরণের খবর দিয়েছে। ইরানের সম্ভাব্য প্রতিশোধের আশঙ্কায় ইজরায়েল জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে এবং সম্ভাব্য ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে। নেতানিয়াহু একে ‘ইজরায়েলের ইতিহাসের চূড়ান্ত মুহূর্ত’ বলে অভিহিত করেছেন। রেকর্ড করা এক ভিডিয়ো বিবৃতিতে ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলের ইতিহাসের একটি চূড়ান্ত মুহূর্তে আছি।
কিছুক্ষণ আগে ইজরায়েল অপারেশন রাইজিং লায়ন শুরু করেছে। ইজরায়েলের অস্তিত্বের জন্য এবং ইরানের হুমকির বিরুদ্ধে এই অভিযান এই হুমকি দূর করতে যত দিন লাগবে ততদিন এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। নিজেকে রক্ষা করতে গিয়ে আমরা অন্যদেরও রক্ষা করি। আমরা আমাদের আরব প্রতিবেশীদের রক্ষা করি। তারাও ইরানের বিশৃঙ্খলা ও হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়েছে। ইরানের প্রক্সি হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে আমাদের পদক্ষেপের ফলে লেবাননে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং সিরিয়ায় আসাদের খুনি সরকারের পতন ঘটেছে। ওই দুই দেশের মানুষের সামনে এখন সুযোগ এসেছে নতুন করে আরও ভালো ভবিষ্যতের দিকে পদক্ষেপ করার।’ এদিকে তিনি আরও দাবি করেন, তারা হামলা না চালালে ইরান ১৫টি পরমাণু বোমা বানিয়ে ফেলত।

শুক্রবার ভোরে ইরানে ইজরায়েলি হামলার পর ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুলফজল শেকারচি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, ইজরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রকে এই হামলার জন্য ‘চড়া মূল্য’ দিতে হবে। তারা আমেরিকার সঙ্গে আর পরমাণু চুক্তির আলোচনায় বসবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে। এদিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি বলেছেন, ইজরায়েলকে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে। এই সব হুঁশিয়ারির মাঝেই ইরানের তরফ থেকে ইজরায়েলে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। ইরানের ড্রোন হামলার কথা স্বীকার করে নিয়েছে। অবশ্য ইজরায়েল বলেছে, ইরানের সব ড্রোনই তারা দেশের সীমানার বাইরেই ধ্বংস করে দিতে সক্ষম হয়েছে।