থাইল্যান্ডের সাবেক নেতা থাকসিন সিনাওয়াত্রা তার বিরুদ্ধে আনা রাজকীয় মানহানির অভিযোগের বিরুদ্ধে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এর ফলে তার ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। তার মেয়ে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে বরখাস্ত করার মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরে এই সাক্ষ্য দিলেন থাকসিন।
থাইল্যান্ডের রাজপরিবারকে সমালোচনা থেকে রক্ষা করার জন্য কঠোর লেস-ম্যাজেস্ট আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয় থাকসিনের বিরুদ্ধে। যা এই মাসের শুরুতে রাজধানী ব্যাংককে একটি রুদ্ধদ্বার বিচারে শুরু হয়েছিল এবং বুধবারও অব্যাহত ছিল।
লেসে-ম্যাজেস্টি বা লেসে-ম্যাজেস্টি হলো একজন ক্ষমতাসীন রাষ্ট্রপ্রধানের বা রাষ্ট্রের মর্যাদার বিরুদ্ধে একটি অপরাধ বা মানহানি।
এক দশক আগে দক্ষিণ কোরিয়ার গণমাধ্যমে থাকসিনের করা মন্তব্যকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রপক্ষ এই মামলাটি করেন। যেখানে আসামিকে কমপক্ষে তিন দিনের সাক্ষ্য দিতে হবে। তবে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে রায় আশা করা যায় না।
থাকসিন ও তার মেয়ে উভয়ের জন্য সাম্প্রতিক ঘটনাবলী সিনাওয়াত্রা রাজবংশের জন্য একটি গুরুতর রাজনৈতিক আঘাত।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দুই সপ্তাহ আগে পেতংতার্নের বরখাস্ত এবং থাকসিনের এই মামলা তাদের পরিবারের রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে অনিশ্চয়তায় ফেলতে পারে।

এদিকে, থাকসিনের আইনজীবী উইনিয়াত চাটমোনট্রি একটি সংবাদ সংস্থাকে সাক্ষ্য দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
১৫ বছর নির্বাসনে থাকার পর ২০২৩ সালের আগস্টে থাকসিন থাইল্যান্ডে ফিরে আসেন। এক সামরিক অভ্যুত্থানের ফলে তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।
এরপর তার পরিবারের ফিউ থাই পার্টি তাদের রক্ষণশীল সাবেক শত্রুদের সমর্থিত জোট সরকারের প্রধান হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের দিনই থাকসিন ফিরে আসেন, যার ফলে সন্দেহ জাগে যে কোনো গোপন চুক্তি হয়েছে।
দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে থাকসিনকে তাৎক্ষণিকভাবে আট বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। পরে রাজা মহা ভাজিরালংকর্নের ক্ষমার মাধ্যমে সাজা কমিয়ে এক বছর হয়।
সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারগুলিতে, থাকসিন রাজতন্ত্রের প্রতি তার আনুগত্য নিশ্চিত করেছেন এবং রাজার ক্ষমার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এদিকে, ১ জুলাই সাংবিধানিক আদালত পেতংতার্নকে বরখাস্ত করেন। ২৮ মে থাই এবং কম্বোডিয়ান সৈন্যদের মধ্যে একটি মারাত্মক সীমান্ত সংঘর্ষ নিয়ে আলোচনার সময় ফাঁস হওয়া একটি কূটনৈতিক ফোন কলের জন্য তাকে অভিযুক্ত করা হয়। ভিডিও কলের সময় তার আচরণের নীতিগত তদন্তের জন্য তাকে বরখাস্ত করেন আদালত। এই কলের ফলে একজন কম্বোডিয়ান সৈন্য নিহত হন এবং এই অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী উত্তেজনা পুনরুজ্জীবিত হয়।