দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্শাল ল তথা সামরিক আইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) পার্লামেন্টে এ সম্পর্কিত বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। এতে আইনপ্রণেতাদের জাতীয় সংসদে প্রবেশে বাধা দেয়ার যে কোনো প্রচেষ্টা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের স্বল্পকালীন সামরিক আইন আদেশে সৃষ্ট রাজনৈতিক সংকটের প্রেক্ষিতে নতুন সরকার এই পদক্ষেপ নিলো। গত বছরের ৩ ডিসেম্বর এশিয়ার গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ কোরিয়ায় হঠাৎ মার্শাল ল জারি করেন প্রেসিডেন্ট ইওল। যা দেশটিকে রাজনৈতিক সংকটে ফেলে দেয়।
সামরিক আইন জারির পর রাজধানী সিউলজুড়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। এমনকি সেনারা পার্লামেন্টের বাইরেও অবস্থান নেয় এবং আইনপ্রণেতা পার্লামেন্টে প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। এসব বাঁধার মুখে ওইদিন রাতে আইনপ্রণেতারা ইউনের আদেশ বাতিল করার জন্য দেয়াল টপকে পার্লামেন্টে প্রবেশ করেন।
পার্লামেন্ট বিরুদ্ধে ভোট দেয়ায় সামরিক আইন জারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট ইওল। তার ওই ঘোষণার পর সামরিক আইন জারির প্রতিবাদ করতে যারা রাস্তায় নেমে এসেছিলেন তারা উৎসবে মেতে ওঠেন। বৃহস্পতিবারের সামরিক আইনের সংশোধনীতে স্পিকারের অনুমোদন ছাড়া সেনাবাহিনী ও পুলিশকে জাতীয় সংসদে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল রাতে এক টেলিভিশন ঘোষণায় ‘রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি’ এবং ‘উত্তর কোরিয়ার হুমকি’র ভয় দেখিয়ে সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেন। তবে কিছুক্ষণ পরই পরিষ্কার হয়ে যায়, কোনো বিদেশি হুমকি নয়, বরং নিজের রাজনৈতিক সংকটের কারণেই তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এরপর হাজার হাজার মানুষ এর প্রতিবাদে পার্লামেন্টের সামনে সমবেত হয়। অন্যদিকে বিরোধী আইনপ্রণেতারা দ্রুত পার্লামেন্টে যান জরুরি ভোটের মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্ত বাতিলের জন্য চাপ দেয়ার জন্য।
ডিসেম্বরের সিদ্ধান্তে ভূমিকা রাখার জন্য প্রেসিডেন্ট ইওলের প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বহিষ্কার এবং আটক করা হয়। ইওলকে অভিশংসিত করে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অপসারণ করা হয় এবং এখনও তার বিচার চলছে।
কয়েক মাসের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ইউনের ক্ষমতাসীন পিপলস পাওয়ার পার্টিকে বিপর্যস্ত করে তোলে। প্রায় ছয় মাসের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার পর গত মাসে একটি আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিরোধী দলের লি জে মিয়ং প্রেসিডেন্ট পদে জয়লাভ করেন।