দিলীপের সঙ্গে থাকার ইচ্ছে ছিল প্রীতমের!‘আমি বাবার কাছে যাব…’

Spread the love

গত মঙ্গলবার ১৩ মে নিজের তরতাজা সন্তানকে হারান বিজেপি নেত্রী, দিলীপ ঘোষের সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী রিঙ্রু মজুমদার। ছেলের মৃত্যর পর, অনেকেই আঙুল তুলেছেন মায়ের দিকে। বিয়ে করে, ছেলের প্রতি ‘গাফিলতি’ করেছেন, উঠেছে এমন অভিযোগও। এরই মাঝে প্রকাশ্য়ে এল রিঙ্কুর এক সাক্ষাৎকরের ঝলক। যা কার্যত শ্যুট করা হয়েছিল, প্রীতমের মৃত্যুর দিনকয়েক আগেই। তার টিজারে দেখা গেল, বারংবার রিঙ্রুর মুখে ছিল ছেলের কথা। কীভাবে ছেলে ভালো থাকবে, কীভাবে ছেলেকে বড় করেছেন, ‘বাবা’র সঙ্গে থাকা নিয়ে প্রীতম কতটা উত্তেজিত!

স্ট্রেট আপ উইথ শ্রী পডকাস্টে, দিলীপ-পত্নী রিঙ্কুকে বলতে শোনা গেল, ‘ছেলেকে খুশি করাই আমার জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য, চেষ্টা করে গিয়েছি ওকে মা-বাবা দুজনের জায়গাটা দেওয়ার।’ জানা যায় যে, ছোটবয়সে নৈহাটির হালিশহরের হাসিন্দা রাজা দাশগুপ্তকে বিয়ে করেন রিঙ্কু। এলাকাবাসীর অভিযোগ, মদ খেয়ে বউয়ের গায়ে হাত তুলতেন রাজা। মানুষ হিসেবেও নাকি সুবিধের নন। ফলে, প্রীতম যখন খুব অল্প বয়সের, তখনই শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে আসেন রিঙ্কু। তারপর থেকে একাই মানুষ করেছেন সন্তানকে।

পডকাস্টেও রিঙ্কু বললেন, ‘কাকা-মামা তাঁরাও খোঁজ নিতেন না। তাঁরা ভাবত, খোঁজ নিলেই যদি তাঁদেরকে সাহায্য করতে হয়।’ এরপর রিঙ্কুকে বলতে শোনা যায়, কীভাবে তাঁর আর দিলীপের সংসারে থাকার ইচ্ছে ছিল প্রীতমের। বলেন, ‘ও ওর বন্ধুদেরকে বলে, আমি তো বাবার কাছে যাব। ওখানেই থাকব। ওঁর একটা ইমোশনাল ডিজায়র অর্থাৎ মানসিক ইচ্ছে আছে একসঙ্গে থাকার।’ (এই সাক্ষাৎকারের শ্যুট হয় সৃঞ্জয় ওরফে প্রীতম দাশগুপ্তের আচমকা মৃত্যুর আগেই)

কীভাবে মারা যান প্রীতম?

মঙ্গলবার উদ্ধার হয় রিঙ্কু পুত্র প্রীতম দাশগুপ্ত ওরফে সৃঞ্জয়ের অচৈতন্য দেহ। বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে এই তরুণকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। প্রথমে, ড্রাগসের ওবারডোজ, আত্মহত্যার মতো নানা সন্দেহ ছিল পুলিশের। যদিও ময়নাতদন্তের পর দেখা যায় যে, ‘হেমারেজিক প্যানক্রিয়াটাইটিসে’ মারা গিয়েছেন প্রীতম। কোনোরকম ফাউল প্লে নেই।

তবে তাতেও সমাজের একটা বড় অংশের যেন শান্তি নেই! তরুণ ছেলের মৃত্যুতে শোকাহত রিঙ্কুকেই বারংবার কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে। রঙ্কু মেনে নিয়েছেন, তাঁর বিয়ের পর থেকে ছেলের মন খারাপ থাকত। খাওয়া-দাওয়া করত না ঠিক করে। দিলীপের কাছে, ছেলেকে নিজের কাছে এনে রাখার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন তিনি

এদিকে, দিলীপ ঘোষ আবার মিডিয়ার সঙ্গে সৎ ছেলের মারা যাওয়া নিয়ে কথা বলার সময় বলে বসেন, ‘আজকে যুবসমাজের মধ্যে নেশার যে কী প্রভাব, তার এটা একটা নমুনা। ঠিক কী হয়েছিল, বলার আগেই তো ছেলেটা শেষ হয়ে গেল। আমাদের সবার কাছে এটা একটা বড় শিক্ষা। আমাদের ছেলেমেয়েরা কোথায় যাচ্ছে? কী করছে? তাকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করে দিলেই দায়িত্ব শেষ হয় না। তারপরও এতবড় রিস্ক থেকে যায়। এটাই চিন্তার বিষয়।’ এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো, চিকিৎসাবিজ্ঞান জানাচ্ছে যে, অতিরিক্ত নেশা ‘হেমারেজিক প্যানক্রিয়াটাইটিসে’র অন্যতম কারণ। যদিও পিত্তথলিতে পাথর, এমনকী, জিনগত কারণ, কিছু ওষুধ, ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার মতো সংক্রমণও অগ্নাশয়ে প্রদাহের কারণ হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *