সমুদ্রের পাশে জগন্নাথ মন্দির। পুরীর পর সেটা দেখতে পাওয়া যাবে দিঘায়। তাই তো আজ সোমবার সেখানে পরিদর্শনে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেলে বেরিয়ে পড়েছেন তিনি পরিদর্শনে। কারণ এখানে বহু উচ্চপদস্থ অতিথিরা আসার কথা। কোনও ত্রুটি যাতে না থাকে তাই সরেজমিনে সবটা খতিয়ে দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী কাল, মঙ্গলবার দিনভর হবে যজ্ঞ। বুধবার হবে উদ্বোধন। যা নিয়ে এখন সৈকতনগরীতে উন্মাদনা তুঙ্গে উঠেছে। ভিড় সামলে সুষ্ঠুভাবে এই অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে সব ধরনের ব্যবস্থা করেছে জেলা প্রশাসন। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের নির্মাণশৈলী থেকে পুজো, সাজসজ্জা এবং জগন্নাথদেবের ভোগ সবকিছুই খতিয়ে দেখছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)।
এদিকে জগন্নাথ মন্দিরের প্রবেশপথেই আছে তিনটি দীপস্তম্ভ। পুরীর মতো এই মন্দিরেও আছে চারটি দুয়ার। গোটা মন্দিরটি তৈরি হয়েছে রাজস্থানের গোলাপি বেলেপাথর দিয়ে। রাজস্থানের বাসিন্দা ৮০০ জন কারিগর দিনরাত পরিশ্রম করে এই মন্দির গড়ে তুলেছেন। যা এখন খতিয়ে দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী। মন্দিরের সিংহদ্বারের সামনে আছে কালো রঙের অরুণ স্তম্ভ। কালো পাথর দিয়ে ৩৪ ফুট লম্বা ১৮মুখী এই অরুণ স্তম্ভটি তৈরি করা হয়েছে। স্তম্ভের একদম মাথায় অরুণা মূর্তি। অরুণ স্তম্ভের সামনের সিংহদ্বারে ঢুকলে সোজাসুজি জগন্নাথদেবের মূর্তি দেখতে পাওয়া যাবে। এই মন্দিরের সিংহদ্বারের বিপরীতে রয়েছে ব্যাঘ্রদ্বার, উত্তরে হস্তিদ্বার এবং দক্ষিণে অশ্বদ্বার। মন্দিরের প্রথমে আছে ভোগ মণ্ডপ। তারও চারটি দরজা।

অন্যদিকে আজ দুপুরে পুরোহিতদের সঙ্গে কথা বলার পর বিকেলে প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দির চত্বরে পৌঁছে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মন্দিরের পরিদর্শনে রয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার–সহ অন্যরা। ‘নয়নপথগামী জয় জগন্নাথ স্বামী’ গান বেজে ওঠে পরিদর্শনের সময়। যেটা লিখেছেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর গেয়েছেন মন্ত্রী তথা গায়ক ইন্দ্রনীল সেন। অক্ষয় তৃতীয়ার দিন উদ্বোধনের সময়ও মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ও সুর দেওয়া গানটি বাজবে।এছাড়া আছে নাটমন্দির, যা ১৬টি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে। নাটমন্দিরের দেওয়ালে আছে কালো পাথরে তৈরি ছোট ছোট দশাবতারের মূর্তি। চারটি স্তম্ভের উপরে দাঁড়িয়ে আছে জগমোহন। জগমোহনের পরই দেখা যাবে গর্ভগৃহ বা মূল মন্দির। সেখানেই সিংহাসনে বিরাজ করছেন জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রা। ভোগমণ্ডপ ও নাটমন্দিরের মধ্যে আছে গরুড়স্তম্ভ। পুরীর মতো এখানেও আছে লক্ষ্মীমন্দির। জগন্নাথের ভোগ রান্নার জন্য রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার যে মূর্তিতে পুজো হবে সেটা নিমকাঠের তৈরি। শাস্ত্রীয় আচার মেনে আগামী ৩০ এপ্রিল বিগ্রহের প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হবে। সবটাই ঘুরে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি খুশি।