নিখোঁজের ২৪ বছর পর খোঁজ মিলল প্রৌঢ়ার

Spread the love

মেলায় গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল মা। বিভিন্ন জায়গায় ছেলে ও অন্যান্যরা খোঁজ চালালেও সন্ধান মেলেনি। থানা-পুলিশও কম হয়নি। খোঁজ পাওয়ার সব দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, ভেবে নিয়েছিল ওই পরিবার। মৃত ভেবে ওই রুপালি হেমব্রম নামে ওই মহিলার শ্রাদ্ধানুষ্ঠানও করেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। সেই প্রৌঢ়ারই খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। সুদূর রাজস্থানে তিনি রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। রুপালি জীবিত আছে জানতে পেরে আনন্দে চোখের জল বাঁধ মানছে না ছেলের। পরিবার-সহ প্রতিবেশীরা এই ঘটনায় উচ্ছ্বসিত। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের লাভপুর আদিবাসী পাড়া এলাকায়। ঘটনার কথা জানতে পেরে ওই মহিলার ছেলেকে নিয়ে রাজস্থানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ।

জানা গিয়েছে, লাভপুর আদিবাসী পাড়া লাঘাটার আদিবাসী রমণী ছিলেন রুপালি। তাঁর মাঝেমধ্যেই স্মৃতিবিভ্রাটের সমস্যা হয়। ২০০১ সালে ঝাড়গ্রামের একটি মেলায় বেড়াতে গিয়েছিলেন রুপালি হেমব্রম। সেখানেই তাঁর ফের স্মৃতিবিভ্রাট হয়েছিল। সেখান থেকে নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। এরপর প্রায় ২৪ বছর কেটে গিয়েছে। সুদূর রাজস্থান থেকে দিন কয়েক আগে ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। জানা যায়, তিনি রাজস্থানের ভরতপুর জেলার একটি হোমে রয়েছেন।

ওই হোম সূত্রেই জানা যায়, কোনওভাবে তিনি রাজস্থানে চলে গিয়েছিলেন। স্মৃতিবিভ্রাটের জন্য তিনি কোনও কিছু মনেও করতে পারেননি। শেষপর্যন্ত মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ওই হোমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই দুই দশকের উপর তাঁর চিকিৎসা চলে। কিছুদিন আগে তাঁর স্মৃতি ফিরে আসে। রুপালি বলতে শুরু করেন, তাঁর বাড়ি লাভপুর লাঘাটা। হোম কর্তৃপক্ষ রাজস্থান থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে গ্রাম লাঘাটা, ব্লক লাভপুর, জেলা বীরভূম খুঁজে বের করেন। এরপর সেখান থেকে যোগাযোগ করা হয়। লাঘাটা আদিবাসী পাড়ায় খবর পৌঁছয়। আদিবাসী পাড়ার মানুষদের সঙ্গে মোবাইলে ভিডিও কলের মাধ্যমে তাঁর কথা হয়। পরিবারের লোকজনও তাঁর সঙ্গে কথা বলে। সকলেই রুপালিকে চিনতে পারেন। মাকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন বড়ছেলে ষষ্ঠী হেমব্রম।গোটা ঘটনার কথা জানতে পারেন লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ। লাভপুর ব্লক প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করে রুপালিকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা শুরু হয়। ওই আদিবাসী মহিলার বড় ছেলে ষষ্ঠী হেমব্রম ও তৃণমূল লাভপুর আদিবাসী সেলের সভাপতি নাড়ু মুর্মুকে নিয়ে রাজস্থান রওনা দিয়েছেন লাভপুরের বিধায়ক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *