পরমাণু আলোচনার জন্য নতুন করে যোগাযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র

Spread the love

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে পারমাণবিক আলোচনার জন্য যোগাযোগ করেছে। মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ইরান আলোচনায় বসবে কিনা তা এখনও ‘বিবেচনা’ করা হচ্ছে।ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর কারণে আমেরিকার প্রতি ইরানের বড় ধরনের অনাস্থা তৈরি হয়েছে এবং যেকোনো আলোচনার আগে এই আস্থা ‘পুনরুদ্ধার’ করতে হবে।

ন্যায়সঙ্গত সমাধানের প্রতিশ্রুতি ছাড়া ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের আলোচনা সম্ভব নয় বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইদ খতিবজাদেহ বলেছেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নতুন আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশের বার্তা পেয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আলোচনায় নিযুক্ত ছিলাম এবং আপনি দেখেছেন, কীভাবে এটি শেষ হয়েছিল। আলোচনার জন্য আস্থার প্রয়োজন এবং এখন কোনো আস্থা নেই।’

এদিকে ওয়াশিংটন সফরে মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় রুদ্ধদার বৈঠক করেছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে বৈঠকের বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। এর মধ্যে ১২ দিনের যুদ্ধে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র যে ইসরাইলি সামরিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে, তা প্রথমবারের মত স্বীকার করেছে তেল আবিব।

১২ দিনের ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ শেষে পরিস্থিতি থিতু হলেও নতুন করে সামনে আসছে সংঘাতের প্রকৃত মাত্রা। মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো এক ইসরাইলি সামরিক কর্মকর্তা স্বীকার করেন যে, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরাইলের কিছু সামরিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, অত্যন্ত অল্প কিছু সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্যবস্তু হয়েছে, তবে এসব ঘাঁটি এখনও সচল রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। যদিও তেল আবিব এ তথ্য এতদিন গোপন রেখেছিল।

এর মধ্যেই টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণে ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা দেখেছেন, ইরান অন্তত পাঁচটি ইসরাইলি সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানে। 

এর মধ্যে ছিল গোয়েন্দা কেন্দ্র ও একটি লজিস্টিকস ঘাঁটি। ইসরাইলি বিজ্ঞান ও প্রতিরক্ষা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়েইজম্যান ইনস্টিটিউট ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ার পর তা আন্তর্জাতিক মহলের নজরে আসে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নৈশভোজে অংশ নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বিনইয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেন, ১২ দিনের যুদ্ধ চলাকালীন ইরান বারবার কূটনৈতিক আলোচনার অনুরোধ করেছে। তবে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। মুখপাত্র বাঘাই সাফ জানিয়ে দেন, তারা কোনো আলোচনার অনুরোধ করেনি।

চলমান উত্তেজনার মধ্যেই সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে জেদ্দায় বৈঠক করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। ইসরাইলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধের পর এটিই তার প্রথম সৌদি আরব সফর। বৈঠকে দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্ক জোরদার এবং পারস্পপরিক সহযোগিতার বিষয়ে ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে তেহরান।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কূটনীতির ছায়ায় হামলা চালিয়ে বিশ্ব নিরাপত্তা ভঙ্গ করেছে। ন্যায়সঙ্গত সমাধানের প্রতিশ্রুতি ছাড়া ওয়াশিংটনের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা সম্ভব না বলে জানান তিনি।

এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাঁচ দফা বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, সেই পরোক্ষ আলোচনা সফল হলে দুই দেশই অর্থনৈতিক দিক দিয়ে লাভবান হতো। তেহরান-ওয়াশিংটনের মধ্যে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যের সম্ভাবনা ছিল বলেও দাবি করেন তিনি।
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *