পহেলগাঁও-কাণ্ডের মর্মান্তিক স্মৃতিচারণ শশী থারুরের

Spread the love

‘আমাকেও মেরে ফেলো!’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দাঁড়িয়ে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁ জঙ্গি হামলার কথা স্মরণ করলেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। অপারেশন সিঁদুরের সাফল্যের পর সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থান এবং পাকিস্তানের মদতের বিষয়টি উন্মোচিত করতে একাধিক দেশে গিয়েছে সংসদের সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল। ব্রাজিল-সহ একাধিক দেশ ঘুরে শশী থারুরের নেতৃত্বাধীন দল একেবারে শেষ গিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানেই অপারেশন সিঁদুর অভিযানের নামকরণ, এক সার্থকতা এবং তাৎপর্য ব্যাখা করেন কংগ্রেস সাংসদ।

গত ২২ এপ্রিলের হামলার কথা স্মরণ করে শশী বলেন, ‘একজন মহিলা, যিনি তার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করতে দেখেছিলেন, তিনি আতঙ্কে চিৎকার করে বললেন, আমাকেও মেরে ফেলো। কিন্তু সন্ত্রাসবাদীরা বলেছিল না। তারা চেয়েছিল যে সে বেঁচে থাকুক, যা ঘটেছিল তার স্মৃতি আজীবন বহন করুক।’ সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় কেন ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামকরণ করা হয়েছে তার ব্যাখ্যাও দেন তিনি। শশী থারুর বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে এটি একটি দুর্দান্তভাবে নির্বাচিত নাম। মার্কিন নাগরিকরা স্পষ্টতই এই সম্পর্কে জানে না। তবে সিঁদুর হল একটি চিহ্ন যা হিন্দু ঐতিহ্য মেনে বিবাহিত মহিলাদের কপালের মাঝখানে লাগানো হয়। হিন্দু নন এমন মহিলারাও সিঁদুর লাগান। তবে তা আরও বেশি সাজসজ্জার উদ্দেশ্যে। স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, বিয়ের সময় সিঁদুর লাগানো হয় এবং তারপরে প্রতিদিন বিবাহিত মহিলারা তা পরেন। তাই, আমরা পহেলগাঁও জঙ্গিদের নৃশংস হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে খুব সচেতন ছিলাম। স্ত্রী এবং সন্তানদের সামনেই সেখানে বেছে বেছে পুরুষদের মারা হয়েছিল। এখন মহিলা যখন তাঁকেও মেরে ফেলার কথা বলেন তখন তারা ফিরে গিয়ে জঙ্গিরা কী করেছে তা সবাইকে বলতে বলা হয়।’ তিনি জানান, মহিলাদের প্রতি যে অন্যায় করা হয়েছিল তার বদলা নিতেই এই নামকারণ হয়।

তিনি জানান, ভারত বিশ্ব মঞ্চে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান বজায় রেখেছে এবং এই ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। মার্কিন আইনসভার সদস্যদের কাছ থেকে অপ্রতিরোধ্য এবং নিঃশর্ত সমর্থন পাওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।তাঁর কথায়, গত কয়েক সপ্তাহে ভারতে আমরা কী সহ্য করেছি তা তুলে ধরতে এবং সংহতি অর্জন করতে এসেছি।থারুর জোর দিয়ে বলেন যে, ‘ওয়াশিংটনে ব্যস্ত আইনসভার সময়সূচী সত্ত্বেও, মার্কিন আইনসভার সদ্যসরা ভারতীয় প্রতিনিধিদলের জন্য সময় বের করে নিয়েছিলেন। তাদের ভোটাভুটিতে তাড়াহুড়ো করতে হয়েছিল, কিন্তু তার আগে তারা আমাদের সঙ্গে ইতিবাচক এবং গঠনমূলকভাবে যোগাযোগ করেছেন। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রামে নিঃশর্ত সমর্থন করা হয়েছে।’

পহেলগাঁও সন্ত্রাসের ঘটনা এবং অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কেবল সামরিক পদক্ষেপই নেননি, বরং আন্তর্জাতিক স্তরে পাকিস্তানকে এক নিন্দিত রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে পাকিস্তানের ভূমিকা স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। থারুর তার সহযাত্রী বিজেপি সাংসদ তেজস্বী সূর্য, শশাঙ্ক মণি ত্রিপাঠী, এলজেপির শাম্ভবী চৌধুরী, টিডিপি সাংসদ জিএম হরিশ বালাযোগী, শিবসেনার রাজ্যসভার সাংসদ মিলিন্দ দেওরা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত তারাঞ্জিত সিং, একযোগে এই বিশ্বযাত্রায় অংশ নিয়ে পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে ফেলে দিতে চায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *