পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যখন একেবারে তলানিতে ঠেকেছে, সেইসময় আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের ভারপ্রাপ্ত বিদেশমন্ত্রী মাওলাওয়াই আমির খান মুট্টাকির সঙ্গে বৈঠক সারলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। যে বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। কারণ পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের মধ্যেই প্রথমবার তালিবান সরকারের ভারপ্রাপ্ত বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের বিদেশমন্ত্রীর আলোচনা হল।
সেই বৈঠকের পরে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, ‘পহেলগাঁ জঙ্গি হামলা নিয়ে তিনি (আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের ভারপ্রাপ্ত বিদেশমন্ত্রী) যে নিন্দা করেছেন, সেটার প্রশংসা করছি। মিথ্যে এবং ভিত্তিহীন দাবির মাধ্যমে সম্প্রতি ভারত এবং আফগানিস্তানের যে বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা করা হয়েছিল, সেটা যে তিনি তীব্র ভাষায় খারিজ করে দিয়েছেন, তাও স্বাগত জানিয়েছি।’
আর সেই মন্তব্যের মাধ্যমে আদতে পাকিস্তানকে টার্গেট করেছেন জয়শংকর। কারণ ‘অপারেশন সিঁদুর’-র পরে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র তথা ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনসের (আইএসপিআর) ডিরেক্টর জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী দাবি করেছিলেন যে আফগানিস্তানকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ভারত। যে দাবি আগেই খারিজ করে দিয়েছে ভারত এবং আফগানিস্তান। দু’দেশের হাতেই গাল লাল করে এসেছেন পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র।

বৃহস্পতিবার মুট্টাকির সঙ্গে সেই বিষয়েও কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। জয়শংকর জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের মানুষের সঙ্গে ভারতের যে চিরাচরিত সম্পর্ক আছে, সেটার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। আফগানদের উন্নয়নের জন্য যে সহযোগিতা প্রয়োজন, তাও প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন জয়শংকর। আর কীভাবে আফগানিস্তানের সঙ্গে সহযোগিতা আরও বাড়ানো যায়, তা নিয়েও কথা হয়েছে।পরবর্তীতে আফগানিস্তানের একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত করা, ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিমাণ আরও বাড়ানো, কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির বিষয়ে ভারতের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে ভারতের সঙ্গে আফগানদের যে সম্পর্ক আছে, সেটা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি চাবাহার বন্দর নিয়েও জয়শংকরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে আফগানিস্তান।