পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর ভারত প্রথমেই পাকিস্তানের শিরায় আঘাত করেছিল এবং সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছিল। এরপরই বিশ্বের একাধিক দেশের কাছে এই ইস্যুতে আবেদন জানিয়েছে পাকিস্তান। এরই মাঝে তাজিকিস্তানের দুশানবেতে হিমবাহ সম্পর্কিত রাষ্ট্রসংঘের প্রথম সম্মেলনের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হল। সেখানেও উত্থাপিত হল সিন্ধু চুক্তি।
তাজিকিস্তানে রাষ্ট্রসংঘের হিমবাহ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং স্পষ্টভাবে বললেন যে পাকিস্তানই প্রথম সিন্ধু জল চুক্তি লঙ্ঘন করেছিল। সীমান্তের ওপার থেকে সন্ত্রাস চালিয়ে তারা এই চুক্তি লঙ্ঘন করেছে বলে জানান কীর্তি বর্ধন। এর আগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে জলের জন্য কেঁদেছিলেন। সেই কান্নাকাটিতে গলে না গিয়ে ভারত সাফ বার্তা দিল সিন্ধু চুক্তি নিয়ে।
এর আগে শেহবাজ বলেছিলেন, ভারত জলকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। শেহবাজ শরিফের মন্তব্যের জবাবে বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিং বলেন, ‘সিন্ধু জল চুক্তির কথা উল্লেখ করে পাকিস্তান এ ধরনের একটি আন্তর্জাতিক ফোরামের অপব্যবহার করতে চায়।’ তিনি বলেছিলেন যে চুক্তির প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে যে এটি সদিচ্ছা ও বন্ধুত্বের চেতনায় করা হয়েছিল। এবং সৎ বিশ্বাসে চুক্তির প্রতি সম্মান জানানো প্রয়োজন ছিল পাকিস্তানের।
ভারতের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান যে ফোরামে বিষয়টি উত্থাপন করেছিল তার সাথে সিন্ধু জল চুক্তি (আইডব্লিউটি) সম্পর্কিত নয়। এ অবস্থায় এটাই প্রমাণিত হচ্ছে যে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকেও সম্মান করে না। কীর্তিবর্ধন সিং বলেন, সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তি, ভূ-রাজনীতি ও আবহাওয়ায় পরিবর্তন এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে এই চুক্তির পুনর্মূল্যায়নের প্রয়োজন ছিল। তা ছাড়া পাকিস্তান যেভাবে সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয় দিচ্ছে এবং জঙ্গি কার্যকলাপে লিপ্ত রয়েছে, তা খাটো করে দেখা যাবে না।

কীর্তি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চুক্তি লঙ্ঘন করে আসছে পাকিস্তান। তাই ভারতকে দোষারোপ করা তাদের জন্য উচিত হবে না। এর আগে ভারতের উদ্দেশে হুঁশিয়ারির সুরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেছিলেন, সিন্ধু জল চুক্তি লঙ্ঘন করে ভারতকে কোটি কোটি মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেবে না পাকিস্তান। তবে ভারত যে ভয় পাচ্ছে না, তা বিদেশ প্রতিমন্ত্রীর কথাতে আরও একবার স্পষ্ট হল। বরং এবার ভয় পাওয়ার পালা পাকিস্তানের।